চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, টাঙ্গাইল
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, টাঙ্গাইল

আদালত বন্ধ থাকা সত্ত্বেও জামিন আবেদন, আইনজীবী বরখাস্ত

আদালত বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ছয় বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় পুলিশের হেফাজতে থাকা এক কিশোরের জামিন আবেদন করায় এক আইনজীবীকে ৩০ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করেছে টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতি।

জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতি কার্যকরী কমিটির জরুরি সভায় গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বরখাস্ত হওয়া আইনজীবী সৈয়দ সাইফুল আলম টিটু জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সদস্য।

বার সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক প্রবীণ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন।

প্রবীণ আইনজীবীর মৃত্যুজনিত কারণে আর জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির প্রথা অনুসারে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বাহাদুর এজলাসে ডেথ রেফারেন্স বা ফুল কোর্ট রেফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথা অনুসারে ওইদিন আদালতের সব বিচারিক কার্যক্রম মুলতবি রাখার সিদ্ধান্ত দেন জেলা ও দায়রা জজ। তবে বার সমিতির প্রথা ভেঙে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মোকদ্দমায় জামিন আবেদন করেন সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাইফুল আলম টিটু।

আসামি নাবালক হওয়ায় আদালতের বিচারক তাকে জামিনে মুক্তি দেন। এর মাধ্যমে ওই আইনজীবী বার সমিতির প্রথা আর শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।

এ বিষয়ে জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, সমিতির কার্যকরী কমিটির জরুরি সভায় প্রথা ভেঙে ও শৃঙ্খলা নষ্ট করার কারণে সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাইফুল আলম টিটুকে ৩০ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এছাড়া সাময়িক বরখাস্ত কেন চূড়ান্তভাবে করা হবে না এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান সমিতির সভাপতি।

অপরদিকে পরিচালিত আদালতের মাধ্যমে বারের ওই প্রথা ব্যত্যয়ের বিষয় নিয়ে আগামীকাল রোববার (১০ জানুয়ারি) সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন জেলা ও দায়রা জজ।

তবে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আইনজীবী সৈয়দ সাইফুল আলম টিটু।

উল্লেখ্য, গত ৩ জানুয়ারি জেলার মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া গ্রামে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাকিবের (১৬) বিরুদ্ধে। রাকিব উপজেলার কালামাঝি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

ঘটনার পরদিন ৪ জানুয়ারি দুপুরে শিশুটির মা বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন। মামলা রুজুর পর কিশোর রাকিবকে (১৬) হেফাজতে নেয় পুলিশ।

৫ জানুয়ারি পুলিশ হেফাজতে থাকা রাকিবকে বিধি মোতাবেক শিশু আদালতে চালান দেন মামলার তদন্তকারী মধুপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরিফ।

সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন কিশোর রাকিবকে জামিনে মুক্তি দেন। এ মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ইলিয়াস হোসেন মনি আর বিবাদী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ সাইফুল আলম টিটু।