দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ

দুর্নীতিবাজরা ঔদ্ধত্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে : দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতিবাজরা ঔদ্ধত্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ব্যাংক লুটপাট হচ্ছে, সরকারি কাজে ঘুষ নিচ্ছে, ব্যবসার ওপর দিয়ে অনৈতিক কাজ করছে। কোথায় নয়, শিক্ষাব্যবস্থায়ও অনৈতিক কাজ হচ্ছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে শ্রেণীকক্ষে লেখাপড়ায় সমস্যা হচ্ছে। এই দুর্নীতিবাজরা তাদের ঔদ্ধত্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সময় এসেছে সবাই এক হয়ে তাদের ঔদ্ধত্যের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়ার।

আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমাদের সমাজে দুর্নীতিবাজ নামক শকুনের উৎপত্তি হয়েছে। আমরা এই শকুনদের উৎখাত করতে চাই। আমরা এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানাই। দুর্নীতিবাজরা তাদের ঔদ্ধত্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে এই বাংলাদেশে। আজকে সময় এসেছে সবাই এক হয়ে তাদের ঔদ্ধত্যের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়ার।

তিনি বলেন, আজকে সময় এসেছে সবাই এক হয়ে এই দুর্নীতিবাজদের ঔদ্ধত্যের একটা উপযুক্ত জবাব দেয়ার। এই জবাব দুর্নীতি দমন কমিশন দিতে পারবে না। দুর্নীতি দমন কমিশন অনুঘটকের কাজ করতে পারবে। কিন্তু সকলের সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়া, দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের রুখে দাঁড়ানো ছাড়া এই দুর্নীতিবাজদের ঔদ্ধত্য রোখা যাবে না।

‘আমার মনে হয় আজকে আমরা সবাই মিলে এক কথায় বলি আমরা তোমাদেরকে ছাড়বো না। আগামী প্রজন্মের মানুষের জন্য কোনোক্রমেই এই দুর্নীতিবাজদের এ সকল অপকর্ম আমরা সহ্য করতে চাই না, সহ্য করবো না, যোগ করেন দুদক চেয়ারম্যান।

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা

তিনি বলেন, টাকা যারা ইনকাম করে তারা কিন্তু টাকা ভোগ করতে পারে না। দুর্নীতিবাজরা এই কথা বুঝতে পারে না- দুর্নীতি করে তারা যে টাকা, সম্পদ জমায়, সেই সম্পদ তারা ভোগ করতে পারে না। শরীর, স্বাস্থ্যের জন্য পারে না, আবার বয়সের কারণে পারে না। তাই তাদের সম্পূর্ণ কাজটা হচ্ছে একটা নেশা। টাকার নেশা আর ক্ষমতার নেশা আমরা বন্ধ করতে চাই। এই দুই নেশার কারণে আমদের আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত অন্ধকারের দিকে আমরা ঠেলে দিতে পারি না।

মৃত্যের আগে নতুন প্রজন্মের জন্য দুর্নীতিমুক্ত একটি পরিবেশ রেখে যাওয়ার শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আজকে শপথ নিতে চাই তোমাদের (নতুন প্রজন্ম) জন্য। দুর্নীতিমুক্ত একটি পরিবেশ আমরা মৃত্যুর আগে রেখে যেতে চাই। তার জন্য প্রয়োজন সকলের সম্মেলিত প্রচেষ্টা এবং প্রয়াস। যাতে করে সরকারি ব্যবস্থাপনা, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়, শিক্ষাব্যবস্থায়, রাজনীতিতে, সামাজিক কর্মকাণ্ডে কোনো রকম দুর্নীতির গন্ধ না থাকে। এই স্বপ্ন আমরা দেখতে চাই। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য চাই জাতীয় ঐক্য, চাই সামাজিক ঐক্য এবং যার যার জায়গা থেকে দুর্নীতিমুক্তভাবে দায়িত্ব পালন।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দুদক সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন ও কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

নগর প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম