পেটে গজ-কাঁচি রেখেই সেলাই: নড়াইলে দুই চিকিৎসকের নামে মামলা

নড়াইলে পেটে গজ, ব্যান্ডেজ ও ছোট কাঁচি রেখে সেলাই সেলাইয়ের অভিযোগে নড়াইলে দুই চিকিৎসকের নামে থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী শারমিন আক্তারের পিতা মো. মনি মোল্যা বাদী হয়ে গতকাল সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন-সদর হাসপাতালের জুনিয়র সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুজ্জামান ও বেসরকারি ফ্যামিলি কেয়ার হাসপাতালের (ক্লিনিক) পরিচালক ডাক্তার মুকুল হোসেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবদ ইউনিয়নের ধোন্দা গ্রামের মো. মনি মোল্যার কন্যা মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার খাটোর গ্রামের মাসুদ মিয়ার স্ত্রী ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই নড়াইল শহরের ফ্যামিলি কেয়ার ক্লিনিকে ৮ হাজার টাকার চুক্তিতে সিজারিয়ান অপারেশন করে এক পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। ক্লিনিক পরিচালক ডাক্তার মুকুল হোসেন এবং ডাক্তার নুরুজ্জামান এ অপারেশন সম্পন্ন করেন। অপারেশনের দশ দিন যেতে না যেতেই অস্ত্রোপচারের জায়গায় ইনফেকশন হয় এবং ফুলতে শুরু করে। পরে ফ্যামিলি কেয়ারে বেশ কয়েকবার গিয়ে কোনো উপকার হয়নি বরং অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি যশোরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানে কর্তব্যরত গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রীনা বোসের পরামর্শ অনুযায়ী আলট্রাসনোগ্রাম করেন। এ সময় ডা. হামিদা আক্তার রিপোর্টে উল্লেখ করেন যে, পেটের মধ্যে ফরেনবডি পরিলক্ষিত হচ্ছে। পরে যশোর সদর হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. রীনা বোসসহ তিনজন চিকিৎসক ৩ দফা অপারেশন করে পেট থেকে গজ, ব্যান্ডেজ ও ছোট কাচি বের করে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছে।

মামলার বাদী আরও জানান, চিকিৎসকদের অবহেলা এবং ভুলের কারণে তার মেয়ের জীবন সংকটাপন্ন। এছাড়া এ পর্যন্ত মেয়ের চিকিৎসা করাতে ২ লাখ টাকার উপরে খরচ হয়েছে। শারমিন আক্তার এখনও যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফ্যামিলি কেয়ার হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার মুকুল হোসেনের মোবাইল নাম্বারে ফোন করলে রিসিভ করে জানানো হয় যে,‘‘এটা ডাক্তারের নম্বর নয়। আপনি তার সাথে সরাসরি কথা বলেন’’। এই কথা বলে ফোন কেটে দেয়।

নড়াইল সদর হাসপাতালের জুনিয়র গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নুরুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমিও ভালো জানি না। ভালো করে জেনে তারপর জানাবো। এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন মামলার কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়টির তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাজী মেসবাহউর রহমান/শিক্ষানবিশ আইনজীবী, জজকোর্ট, নড়াইল