বৈঠক হলেও চূড়ান্ত হয়নি জাতীয়তাবাদী ঐক্যের প্যানেল

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০১৮-১৯ সেশনের নির্বাচনের জন্য বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী ঐক্যের (নীল প্যানেল) বৈঠক হলেও প্রার্থীদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

গতকাল সোমবার (৫ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতির কনফারেন্স কক্ষে বিএনপির সমর্থিত জাতীতাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র আইনজীবীরা এ বৈঠকে অংশ নেন।

জানা গেছে, বৈঠকের বিষয় কারাবন্দী দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়া এবং লন্ডনে অবস্থানরত দলের দ্বায়িত্বরত তারেক রহমানকেও জানানো হতে পারে।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির তৃতীয় তলার কনফারেন্স কক্ষে বিএনপির সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে জাতীতাবাদী আইনজীবী ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে যে সকল আইনজীবী বিএনপির ফোরাম থেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক তাদের কাছে দলীয় মনোনয়ন বিক্রি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সভাপতি পদে ১০ হাজার এবং সম্পাদক পদে আট হাজার টাকা দিয়ে মনোনয়নপত্র কিনতে হবে। তারপর বৈঠকে আলোচনা করে প্রার্থী বাছাই করা হবে।

এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সেক্রেটারি এবং সমিতির সাবেক সম্পাদক বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল গণমাধ্যমকে জানান, আমরা সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছি। বৈঠকে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে পারিনি। তবে আজ (মঙ্গলবার) আবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকের পর বলা যাবে কাদের চূড়ান্ত প্রার্থী করা হচ্ছে।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, শাহজাহান ওমর, বদরোদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, মীর নাসির, আমিনুল হক, সাইদুর রহমান, নিতাই রায় চৌধুরী, তৈমুর আলম খন্দকার প্রমুখ। তবে বৈঠকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়াকে জানানো হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, এই নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ থেকেই এর আগে তিনি প্রতি বছরই প্রার্থীদের খোঁজখবর নিতেন। তবে প্রতি বছরের মতো এবার এ সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া জেলে থাকায় তার সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে কথা বলার সুযোগ কম।

একদিনের বৈঠকে সরকার সমর্থিত আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের (সাদা প্যানেল) প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন তারা। আপনারা পর পর দুই দিন বৈঠক করার পরেও প্রার্থী ঠিক করতে পারেননি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল বলেন, রোববার প্রথম বৈঠক নয়, সেটা ছিল সোমবারের বৈঠকের প্রস্তুতি সভা।

যদিও অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, রোববার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য দ্বিতীয় বৈঠক ছিল।

অন্যদিকে, গত রোববার (৪ মার্চ) রাতে সরকার সমর্থিত আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের (সাদা প্যানেল) চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বারের) সাবেক সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনকে সভাপতি এবং শেখ মোহাম্মদ মোরশেদকে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।