আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী ও সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ১৫ তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বহুতল (১৫ তলা) ভবন নির্মাণ প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন দেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশের ৫০ হাজার আইনজীবীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বার কাউন্সিলের বর্তমান ভবনের জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৬ হাজার ১৪৭ কোটি ৭ লাখ টাকা।
একনেক সভা শেষে প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আজকের সভায় ১৪টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৬ হাজার ১৪৭ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন করা হবে ১৩ হাজার ২৮৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ব্যয় করা হবে ২৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৮৩৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম প্রমুখ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বহুতল এ ভবন নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আইন ও বিচার বিভাগ এবং গণপূর্ত অধিদফতর ২০২১ সাল নাগাদ এটি বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, দেশের ৫০ হাজার আইনজীবীর একমাত্র লাইসেন্সিং ও রেগুলেটরি বডির একটি আধুনিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার স্থানের সংস্থান জরুরি। এটি সম্পন্ন হলে বার কাউন্সিলের আইনজীবী ও বিচারকগণের জন্য সহায়ক কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত হবে। এ উদ্দেশ্যেই প্রকল্পটির প্রস্তাব করেছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বার কাউন্সিল সূত্র জানায়, বর্তমানে হাইকোর্ট সংলগ্ন বার কাউন্সিল ভবনটি পাঁচ তলা। এটি পুরাতন ও জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুকিপূর্ণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া প্রতি বছর ৭-৮ হাজার নতুন অ্যাডভোকেট বার কাউন্সিলের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। যদিও বর্তমান কাউন্সিল ভবনে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসার স্থান সংকুলান করা কঠিন। এমনকি বার কাউন্সিলে নির্বাচিত সদস্যদেরও বসার স্থান ও নথিপত্র সংকুলান করা যাচ্ছে না। ফলে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, নতুন ভবনে বার কাউন্সিলের জন্য নিজস্ব পরীক্ষার হল, ট্রেনিং রুম, প্রযুক্তিনির্ভর লাইব্রেরি, বড় পরিসরে খাবার ক্যান্টিন, আধুনিক সেমিনার কক্ষ, ব্যায়ামাগার (জিমনেশিয়াম), আলাদা আলাদা কক্ষ এবং নির্বাচিত সদস্যদের পৃথক দফতর, আধুনিক ক্লাব ও অত্যাধুনিক রেস্ট হাউসসহ সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
প্রকল্পের আওতায় ৮৩৬ দশমিক ১২ বর্গ মিটার প্লিন্থ এরিয়া বিশিষ্ট ১৫ তলা ভিতের উপর দুটি বেসমেন্টেসহ ভবন নির্মাণ হবে। ১৫ তলা ভবনের মোট আয়তন হবে ১৫ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৩৭ বর্গ মিটার। এর বাইরে ১৯৩ দশমিক ৬০ বর্গ মিটার সীমানা প্রাচীর, একটি এক হাজার কেবিএ সব স্টেশন, তিনটি লিফট, ৩০০ টন সিম্বল টাইপ এসি, একটি গাড়ি ও আসবাবপত্র ক্রয় করা হবে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বিদ্যুতায়ন, বহিঃপানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন, গ্যাস সংযোগ, ভূমি উন্নয়ন, কম্বাউন্ড ড্রেন, অভ্যন্তরীণ রাস্তাসহ অনুষাঙ্গিক কার্যক্রম অর্ন্তভূক্ত রয়েছে।