হাইকোর্ট ও বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন

হাইকোর্টের নির্দেশ না মানায় রেলওয়ের মহাপরিচালককে তলব

রাজধানীর শাহজাহানপুরে পরিত্যক্ত পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ না মানায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (৩ জুলাই) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

একইসঙ্গে আগামী ১৪ আগস্ট রেলওয়ের মহাপরিচালককে আদালতে হাজির হয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থতার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম। এছাড়া রেলওয়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদুল হক।

পরে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার পরও শিশু জিহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্টদের একের পর এক নোটিশ দিয়ে আসছি। সবশেষ তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই আবেদনের শুনানিতে আদালত রেলওয়ের মহাপরিচালককে তলবের আদেশ দিলেন।’

জানা গেছে, গত ২২ জানুয়ারি বিবাদীদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী আব্দুল হালিম। ওই নোটিশ পাওয়ার পরও কোনও জবাব না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করা হয়।

২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে একটি খোলা নলকূপের পাইপে পড়ে যায় চার বছরের শিশু জিহাদ। এরপর প্রায় ২৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও তাকে উদ্ধারে সক্ষম হয়নি ফায়ার সার্ভিস। এর কিছু সময় পরে কয়েকজন তরুণের তৎপরতায় তৈরি করা যন্ত্রের সহায়তায় পাইপের নিচ থেকে তুলে আনা হয় শিশুটিকে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই ঘটনায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ে শিশু জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের পরও ক্ষতিপূরণ পায়নি তার পরিবার।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ মার্চ রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রেলওয়ের মহাপরিচালক, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ও ফায়ার সার্ভিসের একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে এই রুল জারি করা হয়। কিন্তু রুলটির জবাব না পাওয়ায় রেলওয়ের মহাপরিচালককে তলব করেছেন হাইকোর্ট।