সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি হাইকোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়

সড়ক দুর্ঘটনা আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছর করা সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের সঙ্গে কোনোভাবেই সাংঘর্ষিক নয় বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল শেষে মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর করার জন্য রায় দিয়েছিল। এখন সড়ক দুর্ঘটনা আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর করা সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আইনমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো এই রায়টার যে স্পিরিট সেই স্পিরিটটা আমরা রেখেছি। সেটা হচ্ছে যে সড়ক পরিবহনে সম্পূর্ণ আঙ্গিকে শৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা দূরীকরণ। এসব করে সড়ক যেন নিরাপদ এবং নির্ভরশীল হতে পারে সেজন্য আমরা আইনটা করেছি।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় না রায়ের সঙ্গে এই আইনের সংঘর্ষ আছে। আরেকটা কথা আমি বলেই দেই যে কথা আমি গতকালকেও (০৬ আগস্ট সচিবালয়ে) বলেছি এবং আজকেও বলছি। যেখানে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে যে এটা স্বাভাবিক একটি সড়ক দুর্ঘটনা নয়, সেখানে তথ্য ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপর নির্ভর করে সেটা দণ্ডবিধির ৩০২ বা ক্ষেত্রভেদে ৩০৪ ধারা বাস্তবায়ন করা যাবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় না আর কোনো সংঘর্ষ থাকতে পারে। আরেক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আমরা ১৯৭৫ এর পরে যে অব্যবস্থাপনা ছিলো সেটা দূর করতেই কিন্তু ১৯৮৩ আইন (দ্য মোটর ভিকেলস অর্ডিন্যান্স) করেছিলাম। কিন্তু আপনারা জানেন, কি কারণে ১৯৮৩ সালের সেই আইন আজকে পরিবর্তন করতে হলো। পঞ্চম এবং সপ্তম সংশোধনী বাতিল হয়েছে, আইন বাংলা করার বাধ্যবাধকতা এবং আধুনিকায়ন করে যুগোপযোগী করার প্রয়োজন ছিলো। সেই সবদিক বিবেচনায় আমরা এ আইন করেছি। তার মানে এই, যে ইনফ্রাস্ট্রাকচারে (পরিকাঠামো) যেসব জিনিস বাস্তবায়ন করতে হবে, এই আইনটা যাতে ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেই ব্যবস্থা চলছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ওই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন তিনি।

সংগঠনের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান আনসারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক আইনমন্ত্রী সিনিয়র অ্যাডভোকট আবদুল মতিন খসরু এমপি, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ও বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক সম্পাদক এস এম মনির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলএলএম ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডুলা) সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলী আহমেদ খোকন, সংগঠনটির জাতীয় শোক দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওসার প্রমুখ।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র আইনজীবীসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।