ট্রেড ইউনিয়ন করা এবং ধর্মঘট ডাকার শর্ত কিছুটা শিথিল করে শ্রম আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আগে ট্রেড ইউনিয়ন করার জন্য ৩০ শতাংশ শ্রমিকের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। এখন তা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। আগে ধর্মঘট ডাকার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের মত গ্রহণের বিধান ছিল। এখন সেটা কমিয়ে ৫১ শতাংশ করা হয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক জাতীয় সংসদে বুধবার (২৪ অক্টোবর) ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল-২০১৮’ পাসের প্রস্তাব করেন। বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। এর মধ্য দিয়ে ২০০৬ সালের শ্রম আইনে ৪৯টি সংশোধনী আনা হয়।
নতুন সংশোধনীতে বলা হয়েছে, শ্রমিককে প্রসব-পরবর্তী আট সপ্তাহ পর্যন্ত কাজে অনুপস্থিত থাকার অনুমিত দিতে হবে। এই বিধানে আরও বলা হয়েছে, প্রসূতি কল্যাণ ছুটিতে যাওয়ার আগে কোনো নারী শ্রমিকের গর্ভপাত ঘটলে তিনি প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাবেন না। তবে স্বাস্থ্যগত কারণে ছুটির প্রয়োজন হলে তিনি তা ভোগ করতে পারবেন।
বিলে বলা হয়েছে, শ্রমিকেরা প্রতি সপ্তাহে কারখানা ও শিল্পের ক্ষেত্রে একদিন এবং দোকান ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেড়দিন ছুটি পাবেন। কোনো শ্রমিককে কোনো উৎসব বা ছুটির দিনে কাজ করতে বলা যাবে। তবে এ জন্য তাকে এক দিনের বিকল্প ছুটি ও দুই দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরি দিতে হবে।
আইনে বলা হয়েছে, ২৫ জনের বেশি শ্রমিক আছেন এমন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের আনা খাবার খাওয়া এবং বিশ্রামের জায়গা রাখা এবং পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। খাবার কক্ষে যথেষ্ট আলো এবং বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সহনীয় তাপমাত্রায় রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
বিলে বলা হয়েছে, মামলা দায়ের করার তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতের রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ দিতে হবে। এটা সম্ভব না হলে উপযুক্ত কারণ লিখে আদালত আরও ৯০ দিন সময় বাড়াতে পারবেন।
এ ছাড়া জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বিলও বুধবার পাস হয়।