অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন

‘কোথাও ন্যায়বিচার পাননি খালেদা জিয়া’

জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলা চলার ব্যাপারে নিম্ন আদালত বা উচ্চ আদালত কোথাও ন্যায়বিচার পাননি বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর আইনজীবী জয়নুল আবেদিন।

আজ সোমবার (২৯ অক্টোবর) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় আজ বিচারিক আদালতে রায় দিতে আর কোনো বাধা থাকল না। কিছুক্ষণেই মধ্যেই হয়তো এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

আপিল বিভাগের আদেশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘অতীতে কখনো দেখি নাই সরকার এভাবে রায় দেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে। খালেদা জিয়া হাইকোর্টে কোনো প্রতিকার পাননি। আজকের রায়ের পর প্রমাণিত হলো, আপিল বিভাগসহ খালেদা জিয়া কোথাও ন্যায়বিচার পায়নি। এ ধরনের আদেশে আমরা ক্ষোভ প্রকাশ করছি।’

এ সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আরো জানান, আজ বিচারিক আদালতে রায়ের সময় উপস্থিত থাকবেন কি না, তা খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘অতীতে কখনো দেখিনি অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসাপাতালে রেখে রায় ঘোষণা করা হয়। এটা খুবই দুঃখজনক।’

এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান আদেশ দেন।

এ আদেশ বাতিল চেয়ে রিভিশন আবেদন করলে ১৪ অক্টোবর হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেন। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ১৫ অক্টোবর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

এর পর ১৬ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় আজকের জিয়া চ্যারিটেবল মামলার রায় হবে কি না, তা অনেকটা আপিল বিভাগের পরবর্তী আদেশের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ে। আপিল বিভাগের আদেশের পর সেই বাধা কেটে গেল। এখন বিশেষ আদালতে খালেদা জিয়ার মামলার রায় দিতে আর কোনো বাধা থাকল না।

গত ৪ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করেন। ৫ সেপ্টেম্বর সেখানে আদালত বসে। কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া সেদিন আদালতে হাজির হয়ে আদালতকে বলেছিলেন, এ আদালতে ন্যায়বিচার নেই। তিনি অসুস্থ। আদালতে আসবেন না। যত দিন ইচ্ছা আদালত তাঁকে সাজা দিতে পারেন।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে ওই দিন বিকেলে (৮ ফেব্রুয়ারি) নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন।