আহসান উল্লাহ মাস্টার

আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় আপিলের শুনানি পিছিয়েছে

জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কার্যকরী সভাপতি, আওয়ামী লীগ নেতা এবং গাজীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের করা আপিলের শুনানি আট সপ্তাহ পিছিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বাদীপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রিক্ষিতে আজ সোমবার (৭ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যর বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতের শুনানিতে আজ বাদীপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম. আমীর উল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম কামরুল হাসান।

আদেশের বিষয়টি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে জানান, নিম্ন আদালতের দেয়া রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে হাইেকার্টের দেয়া রায়ে খালাস পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল এবং মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি পক্ষের করা আপিলের শুনানিতে বাদীপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আট সপ্তাহের সময় দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, ২০১৬ সালের ১৫ জুন এই মামলায় বিএনপির নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। এরপর একই বছরের (২০১৬ সালের) ৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।

হাইেকার্ট থেকে প্রকাশিত রায়ের পর্যবেক্ষণে আহসান উল্লাহ মাস্টারের হত্যাকে ‘ব্যাপক হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করা হয়।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সমাবেশে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় তৎকালীন এমপি আহসান উল্লাহ মাস্টারকে। সেদিন নিহত হন ওমর ফারুক রতন নামের আরেক ব্যক্তি। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল রায় দেন ঢাকার-১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। রায়ে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

২০০৫ সালে নিম্ন আদালতের রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে ২০১৬ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আসামিদের আপিলের শুনানি শুরু হয়। ৮ জুন এ শুনানি শেষে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়। এরপর ২০১৬ সালের ১৫ জুন রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও শ্রমিকনেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার গাজীপুর-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ১৯৯০ সালে গাজীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও এর আগে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।