‘রাষ্ট্র বনাম জাকারিয়া পিন্টু ও অন্যান্য’ মামলা: আগাম জামিনে আত্মসমর্পণ প্রসঙ্গ
উচ্চ আদালত

নিমতলী ট্র্যাজেডি : ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়

নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বে-আইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত চারটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।

চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সচিব, বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ইউনুছ আলী আকন্দ, ব্যারিস্টার মো. রিয়াজ উদ্দিন ও অমিত দাশগুপ্ত।

পরে রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, দুই আইনজীবীর রিটে শুধু ১৭ দফার বাস্তবায়নের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেছেন। বাকি তিনটি রিট চার সপ্তাহের জন্য স্ট্যান্ড ওভার রেখেছেন। এছাড়া কোর্ট অন্তর্বর্তীকালীনভাবে দুর্যোগ মন্ত্রণালয় যেন ক্ষতিগ্রস্তদের ৫ লাখ টাকা করে দেয় সে আদেশ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, ওনার জানামতে একলাখ টাকা করে দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতের এ মনোভাব (৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার) সরকারকে জানাবেন।

চকবাজারে ২০ ফেব্রুয়ারি রাতের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মারা যান ৬৯ জন। আহত হন আরো অনেক। এখানকার নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশন ঘিরে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় হাইকোর্টে ৫টি আবেদন করা হয়।

চুড়িহাট্টার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত/ক্ষতিগ্রস্তের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ, নিমতলীর ট্রাজেডির পর তদন্ত কমিটির করা ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়ন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নুর মোহাম্মদ আজমী ও খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার, আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং বংশালের বাসিন্দা জাবেদ মিয়া কেমিক্যাল গোডাউন ও কারখানা এবং ব্যবসার উদ্দেশে মজুদ করা গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণ নিয় রিট করেন।

এ চারটি রিট ছাড়াও একটি আবেদন করে কয়েকটি সংগঠন।

২০১০ সালে রাজধানীর নিমতলী ট্র্যাজেডির তদন্ত কমিটির ১৭ দফা বাস্তবায়ন চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)সহ কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়। এজন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় হতাহতের ঘটনায় পুরান ঢাকায় আর যেন রাসায়নিক ব্যবসার অনুমোদন দেওয়া না হয় তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদন করা হয়।

এ আবেদনের আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।