পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুল হক এবং এসআই একরামুল হক

থানায় ধর্ষকের সঙ্গে গৃহবধূর বিয়ে: ওসি প্রত্যাহার, এসআই বরখাস্ত

পাবনায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ তোলা গৃহবধূকে থানায় ডেকে এনে অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ঘটনার সত্যতা পেয়েছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। এ কারণে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুল হককে প্রত্যাহার এবং এসআই একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এরপরই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো।

এসপি জানান, প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ কারণে ওসি ও এসআই একরামুল হকের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়। সন্তোষজনক জবাব না মেলায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ তোলা গৃহবধূর সঙ্গে থানায় অভিযুক্ত ধর্ষকের বিয়ে দেওয়া হয়েছে এমন তথ্য জানার পর সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. ফিরোজ আহমেদকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে মঙ্গলবার রাত ১২টার মধ্যে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবার সকালে প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।

প্রসঙ্গত, তিন সন্তানের জননী ওই নারীর বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের যশোদল গ্রামে। তার অভিযোগ, প্রতিবেশী রাসেল আহমেদ গত ২৯ আগস্ট এক সহযোগীসহ তাকে তার বাড়িতে ধর্ষণ করে। দুই দিন পর (৩১ আগস্ট) তাকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে তিনদিন আটকে রেখে সেখানেও চার-পাঁচ জন তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। বিষয়টি ওই নারী বাড়ি ফিরে স্বজনদের জানালে গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে পুলিশ রাসেলকে প্রথমে আটক করে। ওই নারীর স্বামী থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্ত রাসেলের সঙ্গে থানায় তাকে বিয়ে দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ধর্ষণের মামলা না নিয়ে মীমাংসা করতে অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে গৃহবধূকে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা জানাজানি হলে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন এবং ধর্ষণ মামলা নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেয় জেলা পুলিশ। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ওই গৃহবধূকে থানায় ডেকে নিয়ে মামলা করে পুলিশ।