নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে সন্তুষ্ট অ্যাটর্নি জেনারেল

মাত্র ৬১ কার্যদিবসে বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১৬ আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে এ কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

রায়ের পরে নিজ কার্যালয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, নুসরাত হত্যার ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর স্বল্প সময়ে রায় হওয়া উচিত। এ রায় চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে হাইকোর্টে। এতে কতজনের ফাঁসি থাকবে, থাকবে না তা হাইকোর্টের বিবেচ্য বিষয়। এত অল্প সময়ে বিচার কাজ শেষ হওয়ায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

আরও পড়ুন: নুসরাত হত্যা মামলার রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে মাইলফলক: আইনজীবী

এই মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।

আরও পড়ুন: ওসি মোয়াজ্জেমের শাস্তি হলে নুসরাতের আত্মা শান্তি পাবে: ব্যারিস্টার সুমন

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদরাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত।

১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। গত ২৮ মে তদন্ত শেষে মাদরাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। আর মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে পিবিআইয়ের লাগে ৩৩ কার্যদিবস।