শিক্ষা উপ মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী

এতে ব্যারিস্টারদের এতো দুঃখ পাওয়ার কিছু নাই…

মহিবুল হাসান চৌধুরী: আমি কিছুদিন আগে ব্যারিস্টার টাইটেল বিষয়ে একটি মন্তব্য করেছি, যা নিয়ে আমার অনেক ব্যারিস্টার বন্ধু বেশ দুঃখ পেয়েছেন। আমি উনাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, অনেকে বলছেন আমি বলেছি এটি কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়। আমি এই কথা বলি নাই এটি শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়, এটি অবশ্যই একটি স্নাতকোত্তর শিক্ষা। আমি নিজেইতো এটি পড়েছি!

তবে, এটি বাংলাদেশের আইনী কাঠামোর মধ্যে আমাদের দেশে আইনজীবী হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়। এটি শুধুমাত্র ইংল্যান্ড ও ওয়েলস’র আদালতে আইনজীবী হিসেবে যোগ্যতা লাভের জন্য শুধুমাত্র ইংল্যান্ড ও ওয়েলস এর আদালতের কার্যবিধীর উপরে একটি পোস্ট গ্রাজুয়েট (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি।

যেহেতু এই ডিগ্রি শুধুমাত্র ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের কার্যবিধি শেখানোর জন্য, সুতরাং এতে আমাদের দেশের কার্যবিধি শেখার কিছুই নাই। সে সুবাদে আমাদের দেশে আইনজীবী হিসেবে পেশাগত শিক্ষা নেয়ার জন্য এটি কোনো শিক্ষাগত প্রশিক্ষণ না। এটাই সত্য। আমাদের অনেকেই অনেক পয়সা খরচ করে এটি পড়তে যান। আমার এই ব্যাখ্যায় বা আলোচনায় এতো দুঃখ পাওয়ার কিছু নাই।

তাছাড়া, আমাদের দেশের ৯৮% ব্যারিস্টার ডিগ্রি ও টাইটেল প্রাপ্তগণ যারা বাংলাদেশে আইন পেশায় আছি, এদের কেউই বিদেশের আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়ানোর কোনো অধিকার পাইনি বা সেটা আমাদের লক্ষ্যও ছিলোনা। আমরা এই দেশেই আইনজীবী হিসেবে যোগ্যতা প্রাপ্ত হয়েছি বার কাউন্সিলের মাধ্যমে। সুতরাং যখন এই দেশেই আইনজীবী হতে হবে, সেই সুবাদে আমি বলেছি এবং এখনো বলি, কষ্ট করে মেধা ও অর্থ খরচ করে, শুধুমাত্র একটি ভিন্ন দেশের কার্যবিধির উপরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেয়ার চাইতে সেই বিদেশেই অন্যান্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিতে আরো বেশি কার্যকর এবং প্রয়োগযোগ্য। এতে ব্যারিস্টারদের এতো দুঃখ পাওয়ার কিছু নাই।

যার ইচ্ছে সে এই স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিতে পারে, কারণ এটি নিলে এই ব্যারিস্টার টাইটেলও পাওয়া যায়৷ আমাদের টাইটেলের সমাজে নিঃসন্দেহে এটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার মতামতটি ছিলো আমাদের দেশের আইন পেশার প্রেক্ষাপটে এটি এতো বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। যা আমি নিজেই উপলব্ধি করেছি পরবর্তীতে!

লেখক- সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।