ভারতে নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। কিন্তু সরকারও তাদের অবস্থানে অনড়, পিছু হটবে না। আইন বাতিল করবে না।
এ অবস্থায় আন্দোলনকারী কৃষকদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ‘আত্মাহুতি’ দিয়েছেন এই আইনজীবী। মৃত্যুর আগে চিরকুটে তিনি লিখে গেছেন, কৃষকদের দাবি মেনে নিতে সরকার যাতে বাধ্য হয়, সে জন্যই তাঁর এই ‘আত্মোৎসর্গ’
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ওই আইনজীবীর নাম অমরজিৎ সিং। তাঁর বাড়ি পাঞ্জাব রাজ্যের ফাজলিকা জেলার জালালাবাদে। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দিল্লির উপকণ্ঠে তিকরি সীমান্তে কৃষক আন্দোলন স্থানের অদূরে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলেছে, বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন অমরজিৎ। হরিয়ানা রাজ্যের রোথাক শহরের একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
অমরজিতের কাছ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এতে লেখা, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের করা নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে চলমান কৃষক আন্দোলনের সমর্থন জানিয়ে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেলেন। জনগণের কণ্ঠস্বর শুনতে নরেন্দ্র মোদির সরকার যাতে বাধ্য হয়, সেই জন্য তাঁর এই জীবনদান।
চিরকুটটি লেখা ১৮ ডিসেম্বর। তবে এটি আসলেই অমরজিতের লেখা কি না, তা পরীক্ষা করে দেখছে পুলিশ।
হরিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ঝাজ্জর জেলার এক পুলিশ কর্মকর্তা ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘আমরা তাঁর (অমরজিৎ) মৃত্যুর সংবাদ তাঁর পরিবারের কাছে জানিয়েছি। তারা এখনো পৌঁছায়নি। তাদের বক্তব্য নেওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নয়াদিল্লিতে আসার পথে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় দিল্লির সীমান্তের বেশ কিছু স্থানে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। চলমান কৃষক আন্দোলনের ঘটনায় এর আগে আরও দুজন আত্মহত্যা করেছেন।
চলতি মাসের প্রথম দিকে দিল্লির সিংঘু সীমান্তের কাছে আত্মহত্যা করেন ৬৫ বছর বয়সী শিখ ধর্মপ্রচারক ও আন্দোলনকারী সন্ত রাম সিং।
মৃত্যুর আগে চিরকুটে তিনি লেখেন, কৃষকদের দুরবস্থা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। ওই ঘটনার কয়েক দিন পর পাঞ্জাবের বাথিন্দায় ২২ বছর বয়সী এক কৃষক আত্মহত্যা করনে। দিল্লির সীমান্তের কাছে একটি বিক্ষোভস্থল থেকে ফিরে তিনি আত্মহত্যা করেন।
নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে কৃষকসমাজ যে আন্দোলন শুরু করেছে, দিল্লি অবরোধ করেছে, তার অবসানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকার একাধিকবার আলোচনায় বসলেও তারা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।