সাতক্ষীরায় পল্লী বিদ্যুতের লাইনে জড়িয়ে হাত-পা হারানো শিশু রাকিবুজ্জামানকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
শত কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে শিশুটির বাবার করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (৮ নভেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে ওই শিশুর চিকিৎসায় কত খরচ হবে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এ সংক্রান্তে শুনানির জন্য আদালত আগামী ১৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী তাজুল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, শিশু রাকিবুজ্জামানের চিকিৎসায় কত খরচ হবে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের কাছে তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
এর আগে, হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল রোববার (৭ নভেম্বর) ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিটটি করেন ওই শিশুর বাবা।
রিটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজার, সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার, প্রকল্প পরিচালক, সাতক্ষীরার ডিসি ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শককে বিবাদী করা হয়েছে।
জানা গেছে, সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার প্রতাপনগরের মো. আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর বসতবাড়ীর ওপর দিয়ে নকশা বর্হিভূতভাবে যাওয়া বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে তার সাত বছরের শিশু রাকিবুজ্জামানের হাড়-মাংস ঝলসে ডান হাত এবং ডান পা হারিয়েছে।
গত মার্চে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নকশা পরিবর্তন ও বিধি-বর্হিভূতভাবে আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতল বাসবভনের ওপর দিয়ে ক্যাপ ও কাভারবিহীন বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করে।
এই লাইনে সংযোগ না দিতে পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর আবেদনও করেছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। পরে গত ৯ মে আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর ৭ বছরের শিশুপুত্র রাকিবুজ্জামান ওই বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয় এবং এতে তার শরীর ঝলসে হাড়-মাংস খসে পড়ে।
রাকিবুজ্জামানকে তাৎক্ষণিকভাবে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ মে রাকিবুজ্জামানের ডান হাত ও ডান পায় হাটু থেকে নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়।
এ ঘটনার ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ২৫ মে আব্দুর আব্দুর রাজ্জাক ঢালী সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ক্ষতিপূরণসহ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বিবাদীরা ক্ষতিপূরণ দেননি এবং অন্য কোনো ব্যবস্থাও নেননি। তাই আব্দুর রাজ্জাক ঢালী শত কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেন।