কক্সবাজারে শ্রমিক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আইনজীবী আবু তাহের সিকদারসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজধানীর তোপখানা রোডের একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে শনিবার মধ্যরাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আবু তাহের সিকদার ওরফে তাহের সিকদার (৪৮) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়ার মৃত আফতাব উদ্দিনের ছেলে। অন্যজন তার সহযোগী একই এলাকার আবু বক্করের ছেলে ওবায়দুল করিম (৩৭)।
তাহের সিকদার কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ‘ছাত্র শিবির মনোনীত প্যানেলের’ সদস্য ছিলেন। তিনি কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
পুলিশ পরিদর্শক বিপুল বলেন, তাহের সিকদার এই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি। মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। এছাড়া ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাহের সিকদারের সহযোগী ওবায়দুল করিমকেও হোটেল কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারদের রোববার দুপুরে ঢাকা থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হয়েছে এবং তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান বিপুল।
এ নিয়ে জহিরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ছাত্র শিবিরের দুই নেতাসহ তিন আসামি গ্রেপ্তার হলেন। এর আগে গত ১১ নভেম্বর মধ্যরাতে কক্সবাজার শহরের নুর পাড়া থেকে এই হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে ইমাম খাইরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই সময় র্যাব জানিয়েছিল, ইমাম খাইর শ্রমিক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যার পরিকল্পনা ও হত্যার মিশনে সরাসরি জড়িত ছিল।
ঘটনা বিবরণী
গত ৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার সদরের লিংকরোড স্টেশনে ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছোট ভাই কুদরত উল্লাহ সিকদারের ব্যক্তিগত অফিসে তার সঙ্গে অবস্থান করছিলেন জহিরুল ইসলাম সিকদার। সেখানে তারা দুই ভাই কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নির্বাচনী আলাপ করছিলেন।
ওই সময় একদল লোক মোটরসাইকেল যোগে এসে তাদের গুলি করে এবং কুপিয়ে জখম করে। এতে তিন জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আহতদের মধ্যে কুদরত উল্লাহর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওইদিন রাতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ৬ নভেম্বর সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকা জহিরুল ইসলামের অবস্থারও অবনতি হলে তাকেও চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে ৭ নভেম্বর দুপুরে জহিরুল মারা যান।
এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর কুদরত উল্লাহ সিকদার বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ২১ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।