ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় হওয়া মামলা বাতিলে বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুসের পক্ষে পুনরায় করা আবেদন খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আদালতের সময় নষ্ট করায় মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে সতর্ক করেছেন আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) এই আদেশ দেন।
এ সময় আগে খারিজ হওয়া সত্ত্বেও একই বিষয়ে আবারও আবেদন জানানোর কারণে আইনজীবীকে সতর্ক করেছেন আদালত। আদালতের সময় নষ্ট করায় তাঁকে সতর্ক করেন হাইকোর্ট।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মাকসুদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আজিজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। তাঁকে সহযোগিতা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি এবং মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ।
মামলার বিবরণী
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংস্থাটির সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলায় বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুসসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলায় সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব বিভাগ) মোহাম্মদ লুৎফল হক, ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।
আসামিদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এখন কারাগারে। আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুল হক পলাতক। অপর তিন আসামি জামিনে আছেন।তবে সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন শাহজাহান মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি এই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস। তবে গত ২৬ সেপ্টেম্বর তার আবেদন উপস্থাপন হয়নি মর্মে খারিজ করেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টে আবারও একই আবেদন জানান তিনি। এতে আদালতের সময় নষ্ট করায় আইনজীবীকে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট।