রমজানে হাইকোর্টের সময়সূচি নির্ধারণ
সুপ্রিম কোর্ট

ফৌজদারি অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিদেশ গমন আটকানো যাবে: সুপ্রিম কোর্ট

ফৌজদারি অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে পাসপোর্ট জব্দ ও বিদেশ গমন আটকানো যাবে বলে রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে ফৌজদারি অপরাধে কারও নাম এলেই তার বিদেশ গমন ঠেকানো যাবে না বলেও মত দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

‘দুদক বনাম জি.বি হোসেন ও অন্যান্য’ মামলায় পর্যবেক্ষণসহ পূর্ণাঙ্গ রায় বুধবার (১ ডিসেম্বর) প্রকাশ করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ সইয়ের পর ১৮ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশিত হয়েছে।

রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, ফৌজদারি অপরাধে কারও নাম এলেই তার বিদেশ গমন ঠেকানো যাবে না। তবে একজনের দেশত্যাগের অধিকারকে কখনোই একচ্ছত্র অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। বিশেষ পরিস্থিতিতে এই অধিকার স্থগিত করার সুযোগ রয়েছে।

আদালত আরও বলেছে, সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে ব্যক্তির চলাফেরায় বাধা দেওয়াকে অনুমতি দেয়, তবে তা অবশ্যই আইন অনুযায়ী এবং জনস্বার্থে হতে হবে। তবে আইনের সমর্থনে আরোপিত বিধি নিষেধ ছাড়া কোনও নির্বাহী আদেশে কারও চলাফেরার স্বাধীনতা খর্ব করা অসাংবিধানিক।

রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে যে স্বাধীনতা দেওয়া আছে, তার মূল উদ্দেশ্য সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করা। তাই ফৌজদারি অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে পাসপোর্ট জব্দ ও বিদেশ গমন আটকানো যাবে। তারপরও যদি কেউ আইনকে পাশ কাটিয়ে বিদেশ গমনের চেষ্টা করে, তাহলে আটকানোর পর তিন কার্যদিবসের মধ্যে তা আদালতকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু ফৌজদারি অপরাধে কারও নাম এলেই তার বিদেশ গমন রোধ করা যাবে না।

সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদ: চলাফেরার স্বাধীনতা

জনস্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ- সাপেক্ষে বাংলাদেশের সর্বত্র অবাধ চলাফেরা, ইহার যে কোন স্থানে বসবাস ও বসতিস্থাপন এবং বাংলাদেশ ত্যাগ ও বাংলাদেশে পুনঃপ্রবেশ করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।

মামলার প্রেক্ষাপট

সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুদকসহ সরকারি কোনও সংস্থা ফৌজদারি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে না। তাই আদালতের অনুমতি নিয়ে ব্যক্তির বিদেশ গমনে বাধা দেওয়া যাবে মর্মে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ বিষয়ে হাইকোর্টের তিনটি রায় ও দুটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের পাঁচটি লিভ টু আপিল গত ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যবেক্ষণ ও সংশোধনসহ নিষ্পত্তি করে রায় দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।