রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আব্দুল লতিফ হলে বিচারপতি মো. বজলুর রহমান পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার গত শনিবার (১১ ডিসেম্বর) পাঠাগারটি উদ্বোধন করেন।
এসময় উপাচার্য বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আজকে যে কাজটি করেছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বজলুর রহমানের সম-সাময়িক বন্ধুরা তাদের বন্ধুর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যে কাজটি করেছে তা স্মরণীয়।
অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, পাঠাগারকে বলা হয় বিদ্যার মহাসাগর। লাইব্রেরি অতীত ও বর্তমানকে একসঙ্গে ধরে রাখে। সে জ্ঞানের আঁধার তারা করে দিয়েছে। লাইব্রেরি যতদিন থাকবে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করবে তিনি তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
উপাচার্য বলেন, তিনি তাঁর কর্মের জন্য আমাদের কাছে বেঁচে থাকবেন। আশির দশকে সব আন্দোলনে বজলুর রহমান সক্রিয় ছিলেন। ছাত্রদের কল্যাণে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন সব সময়।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০র দশকে যেসব ছাত্রনেতারা দেশজুড়ে পরিচিতি ছিলো বজলুর রহমান ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে জনগনের মুক্তির বাতি জ্বালিয়ে ছিলেন তিনি। সামরিক সরকারের দমন-পীড়ন সহ্য করেও তিনি বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ও নীতিকে সামনে তুলে ধরেছিলেন। মিথ্যা মামলায় তাকে যাবজ্জীন সাজা দেয় সামরিক আদালত। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত ছাত্রনেতাদের সাজা মুওকুফ করা হয়।
মো. বজলুর রহমান তার অনুসারীদের কাছে ‘ছানা ভাই’ নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯৫৫ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোয়ালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং নবাব আব্দুল লতিফ হলের (কক্ষ নং-১৪৭) আবাসিক ছাত্র ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি ২০০১ সালের ৩ জুলাই একই সঙ্গে হাইকোর্টে অস্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেলেও পরে বাদ পড়েন। উচ্চ আদালতের আদেশে ২০০৯ সালে তিনি ১০ মে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। মোহাম্মদ বজলুর রহমান ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আপিল বিভাগের বিচারক হন। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন।