গোটা বিচার ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি বলেন, সে লক্ষ্যে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতেও প্রধান বিচারপতি জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিচার বিভাগকে সচল রেখেছেন। এজন্য প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, মহামারি জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে ভার্চুয়ালি বিচার কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হয়। প্রথমে গত বছর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ করা হয়। পরে সেটি আইনে পরিণত করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের চলার পথ মসৃণ ছিলনা। বঙ্গবন্ধুর নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পর সে ঘটনার বিচারের পথ বন্ধে ইনডেমনিটি করা হয়েছিল। পিতা হত্যার বিচারের দাবীতে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে আসার পর সুপ্রিম কোর্টে বহুবার এসেছেন। তখন তার ক্ষেত্রে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদেছে। সেদিন সুপ্রিম কোর্টে উপলব্ধির প্রয়োজন ছিল যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও সংগ্রামে স্বাধীনতা পেয়েছি আমরা। সে কারণে বিচারক পদে অনেকে বসতে পেরেছেন।
এ সময় দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের ৯৫ জন বিচারপতি বর্তমানে নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে হাইকোর্ট বিভাগে ১০ জন এবং আপিল বিভাগে ৩ জন বিচারক নিয়ে সীমিত পরিসরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এক মহীরুহে পরিণত হয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্রের এ বিশাল অঙ্গের কাজের পরিধি ও বৈচিত্র্যতা যেমন বেড়েছে, তেমনই জনবল ও এজলাসের সংখ্যা বেড়েছে। বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতা বেড়েছে।
দেশের বিচার বিভাগের বড় বড় অর্জন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনার শাসনামলে হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। এছাড়া জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সম্মানীয় অতিথির বক্তৃতা করেন।
অন্যান্যের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তা, সিনিয়র এডভোকেট, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা-সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।