গান্ধী আশ্রমের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার। সম্প্রতি তাঁর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি। আইন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গান্ধী আশ্রম নোয়াখালী জেলায় অবস্থিত একটি জনহিতকর ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান। ১৯৪৬ সালে জাতিগত সংঘাতের পর মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা ভ্রমণ করেন। তিন মাস দীর্ঘ সে ভ্রমণে ১৯৪৭ সালের ২৯ জানুয়ারি গান্ধী বর্তমানে সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ বাজার নামক স্থানে পরিদর্শনে যান। এ সময় সেখানকার তৎকালীন জমিদার ব্যরিস্টার হেমন্ত কুমার ঘোষ তাঁর সকল সম্পত্তি গান্ধীজির আদর্শ প্রচার এবং গান্ধীজির স্মৃতি সংরক্ষণের একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে জন্য দান করেন এবং গান্ধীজির নামে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
ট্রাস্টটি প্রথমে আম্বিকা কালিগঙ্গা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধন কৃত হলেও ১৯৭৫ সালে এটির নাম পরিবর্তিত হয়ে গান্ধি আশ্রম ট্রাস্টে পরিণত হয়। গান্ধি আশ্রমে গান্ধিজির নামে একটি জাদুঘর ও আছে যাতে গান্ধিজির তখনকার নোয়াখালী সফরের একশতাধিক ছবি ও ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও প্রকাশিত লেখা সংরক্ষিত আছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর, গান্ধী আশ্রমের দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্দেশ্যের পরিবর্তন ঘটে। তখন দাতব্য কার্যক্রমের পাশাপাশি দরিদ্র ও অনগ্রসরদের উন্নয়ন ও কল্যাণের লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে, গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে জীবনযাত্রার উন্নত মানের উন্নয়ন। বর্তমানে আশ্রমটি একটি ট্রাষ্ট হিসেবে পল্লি উন্নয়নের কাজ করছে।
উল্লেখ্য, বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার ১৯৫৩ সালের ৩১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জুরিসপ্রুডেন্সে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৮ সালে বিচার বিভাগে মুন্সেফ (সহকারী জজ) হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ১৯৯৫ সালের ২০ নভেম্বর জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৯ সালের ৩০ জুন অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগ পান। দুই বছর পর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। সংবিধান অনুসারে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর অবসরে যান এই বিচারপতি। অবসরের পর এই আশ্রমের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার। সম্প্রতি তিনি এ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তবে ইস্তফার কোনো কারণ জানা যায়নি।