সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের যারা আছেন তারা প্রত্যেকেই প্রধান বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তবে রাষ্ট্রপতি যাকে যোগ্য বিবেচনা করবেন তাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব দেবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী।
আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্বরে ক্র্যাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক। আর সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফ।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে কোনো বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা রাষ্ট্রপতির সর্বময় ক্ষমতা। রাষ্ট্রপতি তার সুবিবেচনায় যাকে যোগ্য বিবেচনা করবেন এবং আইন ও সংবিধানের পরীধির মধ্যে তার যে ক্ষমতা সেটা ব্যবহার করবেন।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সরকার কোন চিন্তা-ভাবনার মধ্যে নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আজ আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে যারা বিচারপতি আছেন তারা অত্যন্ত যোগ্য। আপিল বিভাগের যারা আছেন তারা প্রত্যেকেই হয়তো প্রধান বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। রাষ্ট্রপতি সেই যোগ্যতা অনুসারে তার বিবেচনা অনুসারে প্রধান বিচারপতি করবেন।
নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধান বলে দিচ্ছে আইন করে দিতে। এ রকম একটা আইন সংসদকে পাশ কাটিয়ে করতে আমি রাজি না। রাষ্ট্রপতি ডায়ালগ শুরু করে দিয়েছেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেই সিদ্ধান্তে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।
আইনের ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার হলো, ১৫ ফেব্রুয়ারি যেহেতু এই নির্বাচন কমিশনের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে এবং সংসদ এর মধ্যে আইন করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আনিসুল হক বলেন, ৬ জন এই সার্চ কমিটির সদস্য। তাদের মধ্যে ৪ জনই কিন্তু সাংবিধানিক পোস্ট হোল্ডার। আর ২ জন সিভিল সোসাইটি থেকে। এখানে কিন্তু রাজনৈতিক দলের কেউ নেই। সরকারি দলের কেউ নেই।
তিনি আরও বলেন, সার্চ কমিটি ১০ জনকে সিলেক্ট করবে এবং নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। সবার নাম দেওয়ার ক্ষমতা ও অধিকার আছে। আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো বিতর্ক করার অবকাশ আছে।
তদন্তের আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিককে গ্রেফতার নয়
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হবার সঙ্গে সঙ্গে কোনো সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হবার আগে এখন ইনকোয়ারির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সেলে যাচ্ছে। যদি অভিযোগ মামলা করার মতো হয় তাহলে মামলা আদালতে যাবে। এর আগে যেন কোনো সাংবাদিককে মামলায় জড়ানো না হয়। এই আইন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য করা হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু এও জানি এর দুর্ব্যবহার হয়েছে। এটা যাতে বন্ধ হয় সেজন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। গত বছরই ইউনাইটেড নেশনসে ডায়ালগ শুরু করেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বন্ধে করণীয় কি হতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বেস্ট প্রাকটিস যাতে হয়, আইনের ক্ষমতাবলে বিধিতে সেসব রাখা যাবে যাতে আইনের অপব্যবহার না হয়।
আরও পড়ুন: ‘আলাদা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছেন সাংবাদিক ও আইনজীবীরা’