কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার জুবিলী ব্যাংকের অবসায়ন সংক্রান্ত হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ নভেম্বর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চের ঘোষিত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত হয়েছে।
রায়ে আদালত ব্যাংকটির অবসায়নে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ‘দ্য অফিসিয়াল লিক্যুইডিটর’ (অবসায়ক) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ জন্য তাকে প্রতি মাসে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ফি দিতে হবে।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফারিয়া হককে অতিরিক্ত লিক্যুইডিটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাকে প্রতি মাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা ফি দিতে হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।
একইসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্তদের ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেই সাথে নয় মাসের মধ্যে তারা এ ব্যাংকের বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে সকল কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে রায়ে।
আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম ও কাজী এরশাদুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল ওহাব এবং যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী একেএম বদরুদ্দোজা।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম। তিনি জানান, ব্যাংকটির মূলধনের বিষয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনের বিধান মানা হয়নি। এ কারণে অবসায়ন চেয়ে আবেদন করা হয়। এ প্রেক্ষিতে আদালত উপরোক্ত আদেশ প্রদান করেন।
জানা গেছে, ১৯১৩ সালের ১৫ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার জানিপুরে ‘খোকসা জানিপুর জুবিলী ব্যাংক লিমিটেড’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালের ২৬ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়ে ব্যাংকটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা শুরু করে।
ব্যাংকটি ১৯৮৭ সালের ২৬ জানুয়ারি নাম পরিবর্তন করে হয় ‘জুবিলী ব্যাংক লিমিটেড’ (অতফসিলি পাঁচটি ব্যাংক)। বিভিন্ন সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর কয়েক খুনি জুবিলী ব্যাংকের মালিকানায় ছিলেন।
গত কয়েক বছরে ব্যাংকটি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এটির অবসায়নে হাইকোর্টে আবেদন করে।