অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদান, জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদানে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও সঞ্চয়ত্রের মুনাফার অর্থ প্রদানে হয়রানির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) পৃথক তিনটি অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়াও, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য ০৬টি দপ্তরে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
অভিযান- ১
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এর মেট্রো ঢাকা বিপণন বিভাগের অধীন কদমতলী, মাতুয়াইল ও শ্যামপুর এলাকার ছোট ছোট কারখানায় তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে যোগসাজশ করে মাসোহারার বিনিময়ে অবৈধ সংযোগ প্রদানের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইসমাইল হোসেন ও সহকারী পরিচালক মোঃ সহিদুর রহমান এর সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম গতকাল এই অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানকালে টিম অভিযোগের ব্যাপারে তিতাসের মেট্রো ঢাকা বিপণন বিভাগের উপ মহাব্যবস্থাপক মোঃ মামুনুর রশিদের সাথে কথা বলে তার কার্যালয়েরে একটি কারিগরী টিমসহ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে।
পরিদর্শনকালে টিম দৈবচয়ন ভিত্তিতে বিভিন্ন কারখানার গ্যাস সংযোগের বৈধতা যাচাই করে। এ সময় সম্প্রতি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা কিছু কারখানার কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা যায়, তারা বর্তমানে কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে বৈধ সংযোগ ব্যবহার করছেন।
দুদক টিম অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করার জন্য তিতাসের উপ মহাব্যবস্থাপককে পরামর্শ প্রদান করেন।
এ সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করার জন্য রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে যা পর্যালোচনাপূর্বক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
অভিযান- ২
গুনবহা ইউনিয়ন পরিষদ, বোয়ালমারী, ফরিদপুর-এর সচিব ও ডিজিটাল উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে জন্ম সনদ প্রদানে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে দুদক জেলা কার্যালয় ফরিদপুর এর সহকারী পরিচালক বজলুর রহমান এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
অভিযানকালে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: হাফিজুর রহমান জানান, তার এক আত্মীয়ের পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলের জন্ম নিবন্ধন করার জন্য ডিজিটাল উদ্যোক্তা ইমরান-কে ২০০/- টাকা দেন। কিন্তু উদ্যোক্তা ৬০০/- টাকার কমে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদানে রাজি হয়নি।
এছাড়া, উক্ত এলাকার বাসিন্দা জনাব নূরুল আলমও দুদক টিমকে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তিতে ঘুষ প্রদানের অভিযোগ জানান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে দুদক টিম গুনবহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে টেলিফোনিক আলোচনা করে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা থাকায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে দুদক টিম কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অভিযান- ৩
পোস্ট অফিস, মৌলভীবাজার-এর সহকারী পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে গ্রাহকের সঞ্চয়ত্রের মুনাফার অর্থ প্রদানে হয়রানির অভিযোগে দুদকের হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শোয়ায়েব হোসেন এর নেতৃত্বে অপর একটি পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে দুদক টিম অভিযোগকারীর সঞ্চয়পত্রের মুনাফা প্রদানের নথিপত্র পর্যালোচনা করে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, অভিযোগকারী সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হিসাব করতে ভুল করায় তিনি পোস্ট অফিসের কর্মকর্তাদের প্রতি সংক্ষুব্ধ হন।
দুদক টিম পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষকে সেবা গ্রহীতাদের আরও আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করতে পরামর্শ প্রদান করে।