শাস্তির আদেশের প্রথম দিনে রোববার (১০ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে মাদকবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন আব্দুল্লাহ
শাস্তির আদেশের প্রথম দিনে রোববার (১০ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে মাদকবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন আব্দুল্লাহ

‘অনুতপ্ত-লজ্জিত’ সেই আসামির সাজা মওকুফ করেছেন বিচারক

আদালত চত্বরে প্ল্যাকার্ড হাতে তিন কার্যদিবস মাদকবিরোধী প্রচার চালানোর পর মাদক মামলার আসামি আব্দুল্লাহর সাজা মওকুফ করে দিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের একটি আদালত।

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) আসামির সাজা মওকুফ করে দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আব্দুল হামিদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আব্দুল্লাহ (৫২) রাণীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর গ্রামের প্রয়াত মনতাজ আলীর ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আক্তারুল ইসলাম।

ওই মামলায় গত ৬ এপ্রিল আব্দুল্লাহকে এক বছরের কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক। তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে সাজা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। আব্দুল্লাহও সৎভাবে জীবনযাপনের পাশাপাশি মাদক সংশ্লিষ্ট কাজ থেকে দূরে থাকার অঙ্গীকার করেন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক সাজা মওকুফের শর্ত হিসেবে আসামিকে টানা ১০ কর্মদিবস আদালত চত্বরে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে মাদকবিরোধী প্রচার চালাতে বলেন।

রায় অনুযায়ী, আব্দুল্লাহ গত রবি ও সোমবার প্ল্যাকার্ড হাতে এক ঘণ্টা আদালত চত্বরে দাঁড়ান। ওই প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘মাদক ব্যবসার জন্য আমি দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী’, ‘মাদক দেশ ও দশের শত্রু, মাদক পরিহার করুন’।

একইভাবে গতকাল মঙ্গলবারও আব্দুল্লাহ আদালত চত্বরে দাঁড়ান। তখন বিচারক তাকে ডেকে নেন এবং তার সাজা মওকুফের বিষয়টি অবগত করেন।

আইনজীবীরা জানান, “দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডার অর্ডিন্যান্স-১৯৬০ অনুযায়ী, দুই বছরের কম সাজার অপরাধের আসামিকে বিচারক সতর্ক করে ছেড়ে দিতে পারেন। জামিনদার রেখে বা না রেখে ছেড়ে দিতে পারেন। আবার সংশোধনের জন্য সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাজার আদেশও দিতে পারেন।”