বার কাউন্সিল নির্বাচন: শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল

বার কাউন্সিল নির্বাচন: শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

আগামী ২৫ মে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বার কাউন্সিলের ১৪ জন সদস্য নির্বাচনের জন্য এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ সারা দেশের জেলা আইনজীবী সমিতিতে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে।

সুপ্রিম কোর্ট বার ও ঢাকা বারে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের ব্যানার ফেসটুন ও লিফলেটে ছেয়ে গেছে। শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ভোট চেয়ে সময় পার করছেন। এ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে দুই পক্ষের আইনজীবীরাই আশাবাদী।

প্রতিবারের মতো এবারো দেশব্যাপি ১৪ পদে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বার কাউন্সিলের সদনপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেটদের মধ্য থেকে সাধারণ সিটে ৭ জন এবং গ্রুপ সিটে ৭ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। গ্রুপ সিটের ক্ষেত্রে লোকাল আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেটদের মধ্য থেকে সাতজন সদস্য নির্বাচিত হবেন।

আগামী ২৫ মে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন, দেশের সকল দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণসহ বাজিতপুর, ইশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাংগা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছা দেওয়ানি আদালতে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা

নির্বাচনকে ঘিরে প্যানেল ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ। বরাবরের মতো এবারো দেশের বৃহত্তম এ দুটি রাজনৈতিক দল সমর্থিত আইনজীবী সংগঠনের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থী যারা

এবারের বার কাউন্সিল নির্বাচনে সাধারণ আসনে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন- অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান বাদল, অ্যাডভোকেট মো. খসরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম খান (সদ্য প্রয়াত অ্যাডভোকেট শাহ মো. জিকরুল আহমেদের আসনে), অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম (বুদু) ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ (রাজা)।

এছাড়া অঞ্চলভিত্তিক সাতটি গ্রুপ আসনে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন: গ্রুপ-এ ঢাকা অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন, গ্রুপ-বি বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন খান, গ্রুপ-সি বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক, গ্রুপ-ডি বৃহত্তর কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট এ এফ এম রুহুল এনাম চৌধুরী (মিন্টু), গ্রুপ-ই বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালীর জন্য অ্যাডভোকেট আনিস উদ্দিন আহমেদ শহীদ, গ্রুপ-এফ বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়ার জন্য অ্যাডভোকেট ইকরামুল হক এবং গ্রুপ-জি বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার জন্য অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান।

আইনজীবী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী যারা

অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে সাধারণ আসনে লড়ছেন বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ জসীম উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুল মতিন।

আর অঞ্চলভিত্তিক গ্রুপ আসনে ঢাকা অঞ্চলের জন্য লড়ছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন মিয়া, ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট আব্দুল বাকী মিয়া। চট্টগ্রাম নোয়াখালীর জন্য অ্যাডভোকেট এ এস এন বদরুল আনোয়ার, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ উদ্দিন। খুলনা বরিশাল ও পটুয়াখালীর জন্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন বাচ্চু, রাজশাহী যশোর কুষ্টিয়ার জন্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাইনুল আহসান। দিনাজপুর বগুড়া রংপুর পাবনা শফিকুল ইসলাম টুকু।

৭৯ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ

আসন্ন নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালনে ৭৯ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোর্শেদ আল মামুন ভুঁইয়ার সই করা বিজ্ঞপ্তি গত সোমবার (১৬ মে) জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সম্মতি সাপেক্ষে বিচার বিভাগীয় এসব কর্মকর্তাকে নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালনে নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত ৭৯ কর্মকর্তা ভোট চলাকালীন সময়ে (সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত) প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।

নিয়োগপ্রাপ্ত ৭৯ কর্মকর্তার তালিকা দেখতে বিজ্ঞপ্তি ক্লিক করুন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৪টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনে জয়ী হয়েছিল সরকার সমর্থকদের সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ। অপর দিকে বিএনপি জোটের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল পেয়েছিল মাত্র দু’টি আসন।