ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম নির্ভর কনটেন্ট প্রকাশের ওপর তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব আদায়ে একটি নীতিমালা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশনা অনুযায়ী এসব প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণে চূড়ান্ত খসড়া নীতিমালা হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১২ জুন) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ নীতিমালা দাখিল করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়।
এছাড়া একই বিষয়ে আদালতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকেও একটি খসড়া নীতিমালা জমা দেওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামী ১৯ অক্টোবর এই বিষয়ে শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১৮ জানুয়ারি ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম নির্ভর কনটেন্ট প্রকাশের ওপর তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব আদায়ে একটি নীতিমালা করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তথ্য সচিব ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওটিটি-নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনৈতিক ও আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট পরিবেশন রোধে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে ওই সব প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ-তদারকিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ ২০২০ সালের ১২ জুলাই হাইকোর্টের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে রিট আবেদনটি দাখিল করেন।
রিটের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ১৫ জুলাই হাইকোর্টের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ ওটিটি-নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থেকে অনৈতিক ও আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট সরাতে সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এছাড়া বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে এক মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়।
একই সঙ্গে ওটিটি-নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব পেজ প্ল্যাটফর্ম থেকে দেশে অনৈতিক ও আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট পরিবেশন বিষয়ে অনুসন্ধান করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সাথে রিটটি নিয়মিত বেঞ্চে দাখিল করতে বলা হয়।
এরপর রিটটি হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে দাখিল করা হয়। শুনানি নিয়ে একই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে ওটিটি–নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থেকে অনৈতিক ও আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট পরিবেশন রোধ বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এ ছাড়া ওটিটি-নির্ভর বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম তদারকির জন্য নীতিমালা প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, তথ্যসচিব, সংস্কৃতিসচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ আট বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট এসব প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা জারি করেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আজ বিটিআরসি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক খসড়া নীতিমালা আদালতে দাখিল করা হয়।