গরীব ও অসহায়দের পক্ষে মামলা পরিচালনার শর্তে দণ্ডিত আইনজীবী প্রবেশনে মুক্ত
আইনজীবী (প্রতীকী ছবি)

১২ কোটি টাকা ফি নেওয়ার অভিযোগ: আইনজীবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ

গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে প্রতিষ্ঠানটির চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী ইউসুফ আলীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ (ফ্রিজ) করা হয়েছে।

আজ রোববার (৩ জুলাই) অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী নিজে গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী জানান, সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখেছেন তার ৬টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।

এসময় ১২ কোটি টাকায় সমঝোতার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকম থেকে ১২ কোটি টাকা নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদেরকে বঞ্চিত করে মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত যে তথ্য প্রচার করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও অসত্য।’

ইউসুফ আলী বলেন, ‘১২ কোটি টাকার কথা যে বলা হচ্ছে, তা টোটালি একটি ইমাজিনারি ফিগার। তবে আমি বড় অঙ্কের ফি পেয়েছি। আমার ক্লায়েন্টরা বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছেন, আমাকে বড় অঙ্কের ফি দিয়েছেন।’

তবে ফি সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্লায়েন্টদের মধ্যে যারা তিন কোটি বা তার বেশি পেয়েছেন, তারা নিজেরা ঠিক করেছিলেন ১৫-২০ লাখ টাকা করে দেবেন। আমার ১০০ জন ক্লায়েন্ট তিন কোটি টাকার বেশি পেয়েছেন। এটা থেকে আপনারা ধারণা করতে পারেন আমি কত টাকা পেয়েছি। ক্লায়েন্টরা আমাকে হাসি মুখে ফি দিয়েছেন। তারা কারো কাছে অভিযোগ করেননি।’

এর আগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় রিটকারীদের এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকা ফি’র বিনিময়ে সমঝোতার অভিযোগ ওঠে।

এরপর ৩০ জুন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন হাইকোর্ট। তখন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছিলেন, বাংলাদেশ কেন, এই উপমহাদেশে এমন কোনো আইনজীবী জন্ম নেননি যার ফি ১২ কোটি টাকা।

আদালত আরও বলেন, আমরা শুনেছি শ্রমিকদের আইনজীবীকে অর্থের বিনিময়ে হাত করে তাদের মামলায় আপস করতে বাধ্য করা হয়েছে।

আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। শ্রমিকদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে এ আবেদন হয়।

গ্রামীণ টেলিকমের কাছে শ্রমিকদের পাওনা আড়াই শ কোটি টাকার বেশি। এই পাওনা টাকার দাবিতে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়।