৯৭ সহকারী জজ নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন
বিচারক (প্রতীকী ছবি)

পদোন্নতির পরও ২২৫ বিচারকের পদায়ন হয়নি

আড়াই বছর আগে জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত হলেও পদায়ন সম্পন্ন হয়নি এখনও। পদ শূন্য হওয়ার আগেই ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিভিন্ন পদে ৭০৬ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করে সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত ফুল কোর্ট সভা। তাদের মধ্যে এবার আট ধাপে তিনটি পদে ২২৫ জন বিচারকের পদোন্নতিসহ পদায়ন কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ৯১ জন যুগ্ম জেলা জজকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতিসহ পদায়ন করা হবে। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে চলতি মাসে সুপ্রিম কোর্টে প্রস্তাব পাঠানোর কথা।

চাকরিবিধি অনুযায়ী, পদায়ন (পোস্টিং) হওয়ার পরই পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত বিচারকরা সংশ্নিষ্ট পদে গ্রেড অনুযায়ী বেতনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তাই পদোন্নতির পরও পদায়ন না হওয়ায় হতাশ হয়ে উঠছেন সংশ্নিষ্ট বিচারকরা।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর এবার আট ধাপে তিনটি পদে ২২৫ জন বিচারকের পদোন্নতিসহ পদায়ন প্রক্রিয়া কার্যকর হতে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিভিন্ন কারণে পদোন্নতির পরও সংশ্নিষ্টদের পদায়ন করা হয়নি। এখন সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে সংশ্নিষ্টদের পদায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে।

এদিকে পদোন্নতির পরও পদায়নের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসন ক্যাডারে পদ না থাকার পরও পদোন্নতি কার্যকর হয় এবং তাঁরা পদোন্নতি অনুযায়ী সব ধরনের আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হন। অথচ বিচার বিভাগে কর্মরতদের পদোন্নতি হলেও তাদের পদ শূন্য হওয়ার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। তাঁরা শুধু নামেই পদোন্নতি পান, কোনো ধরনের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পান না। এ ধরনের বৈষম্যের অবসান হওয়া প্রয়োজন।

ফুল কোর্ট সভায় পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত

সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ২০৭ জন সিনিয়র সহকারী জজকে যুগ্ম জেলা জজ, ৩৫০ জন যুগ্ম জেলা জজকে অতিরিক্ত জেলা জজ এবং ১৪৯ জন অতিরিক্ত জেলা জজকে জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভা। প্যানেলভুক্তরা বিচার বিভাগে কর্মরত বিচারকের এক-তৃতীয়াংশ।

তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ফুল কোর্টের ওই সভায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে কিছু পদ শূন্য হলে এই প্যানেল থেকে তিনটি পদে পদোন্নতি কার্যকর করে আইন মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, অধস্তন আদালতে বর্তমানে ১৫টি জেলা জজ, ৯১টি অতিরিক্ত জেলা জজ এবং ৩৫টি যুগ্ম জেলা জজ পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে আরও কিছু পদ শূন্য হবে। এ জন্য উল্লেখিত শূন্য পদগুলোয় আট ধাপে পর্যায়ক্রমে পদোন্নতিসহ পদায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ২০১৯ সালে পদোন্নতির প্যানেলভুক্তদের তালিকা থেকে জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও যুগ্ম জেলা জজের নাম আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হবে সুপ্রিম কোর্টে।

১২০ সহকারী জজের পদোন্নতি

গত ২৬ জুন সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ১২০ জন সহকারী জজকে সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির অনুমোদন করা হয়েছে। ৩০ জুন তাদের পদোন্নতি কার্যকর করেছে আইন মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, বর্তমানে ৪১১ জন সহকারী জজ এবং ৩০০ সিনিয়র সহকারী জজ দায়িত্ব পালন করছেন। সহকারী জজ, সিনিয়র সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ, জেলা জজ এবং সিনিয়র জেলা জজসহ অধস্তন আদালতে ১ হাজার ৮৪৯ জন বিচারক কর্মরত।

সূত্র: সমকাল