মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : প্রায় তিন লাখ ইয়াবা পাচারের দায়ে কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আবদুর রউফ-কে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। রায়ে একইসাথে ৩ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (১ আগস্ট) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুর রউফ (৩৮) সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। তিনি সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়ার আবদুল হকের পুত্র। রায় ঘোষণার সময় আসামী আবদুর রউফ মেম্বার আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনাকারী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) এর ৯(খ) ধারায় আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় প্রদান করা হয়। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মেম্বার, অর্থাৎ জনপ্রতিনিধি বিবেচনায় আসামীকে অপরাধের নিম্নতম সাজা প্রদান করা হয়েছে বলে রায় প্রচারের সময় বিজ্ঞ বিচারক ঘোষণা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০১৮ সালের ১৬ মার্চ রাত সাড়ে ১২ টার দিকে কোষ্টগার্ড কক্সবাজারের টেকনাফের কেরুনতলী স্টেশনের একটি টিম টেকনাফের সেন্টমার্টিনের চেরাদ্বীপে এক অভিযান চালিয়ে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬০০ ইয়াবা উদ্ধার করে। কোস্ট গার্ডের অভিযান টের পেয়ে আবদুর রউফ পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় কোস্ট গার্ডের কেরুনতলী স্টেশনের পেটি অফিসার এম.এ মালেক বাদী হয়ে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) এর ৯(খ) ধারায় আবদুর রউফ মেম্বারকে একমাত্র আসামী করে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৩১/২০১৮ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ১২০/২০১৮ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর ১২১৪/২০১৯ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। মামলায় ১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) এর ৯(খ) ধারায় আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন।
মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করে কক্সবাজার বিচার বিভাগে বিচারাধীন থাকা মাদকের মামলাগুলো খুবই গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে রায় ঘোষণার পর পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা আতংকিত হয়ে এখন নড়েচড়ে বসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।