অ্যাসিড নিক্ষেপের দায়ে মা-মেয়ের যাবজ্জীবন
আদালত ভবন, চট্টগ্রাম

স্বামীর করা যৌতুক মামলায় স্ত্রীর জেল-জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সচরাচর শোনা যায় বরপক্ষ কনেপক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করেন। আর যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে মারধরকে কেন্দ্র করে সংসার ভাঙ্গার ঘটনাও কম নয়। এছাড়াও আইনি প্রতিকার চেয়ে যৌতুক নিরোধ আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়ার উদাহরণও সমাজে অহরহ। ওই মামলায় সাজা মাথায় নিয়ে জেলখাটতে হয়েছে এবং হচ্ছে অনেক পুরুষের।

তবে চট্টগ্রামে ঘটেছে ঠিক উলটো ঘটনা। স্বামীর করা যৌতুক মামলায় স্ত্রীকে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করার অভিযোগ এনে আলী রুবেল নামের এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী তৌহিদুন নাহারের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে যৌতুক নিরোধ আইনে আদালতে মামলা করেন।

এ মামলায় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর চলতি বছরের ৩০ জুলাই চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ খান রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিচারক ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী তৌহিদুন নাহারকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে তাকে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আদালতে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসাইন খান। তিনি জানান, এই মামলাটি ছিল স্রোতের বিপরীতে। তবে ঘটনা যেহেতু সত্য ছিল সেহেতু আমরা আশাবাদী ছিলাম যে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হব।

অ্যাডভোকেট মোশাররফ বলেন, প্রায় দুই বছরের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বিজ্ঞ আদালত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এ রায় ঘোষণা করেছেন। সবকিছু আইন মেনেই হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি এবং আমরা সন্তুষ্ট।

এদিকে রায় ঘোষণাকালে আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে রায় ঘোষণার পরপরই আপিল করার শর্তে আসামিপক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হয়। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে আসামিকে ১ মাসের জামিন দিয়েছেন।

 এই রায়ের ফলে আইন সকলের জন্য সমান বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবীরা। ফলে যৌতুক দাবি করলে ছেলেপক্ষও মেয়েপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারবেন বলেও জানান তারা।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী মোশাররফ হোসাইন খান বলেন, অনেক সময় ছেলে পক্ষ লোকলজ্জার ভয়ে এসব বিষয় চেপে যান। তবে আদালতের এই ধরণের রায় আশা জাগানিয়া। এই রায়ের মাধ্যমে সমাজের নির্যাতিত পুরুষদের বিচার চাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।