স্ত্রী উদ্ধারে স্বামীর রিট খারিজ
সুপ্রিম কোর্ট, বাংলাদেশ

মরদেহ নিয়ে ফেরার পথে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা, ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণে রুল

অ্যাম্বুলেন্সে করে স্ত্রীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সবজি বিক্রেতা আয়নালের পরিবারের সদস্য ও আহতদের জন্য ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক আবেদন শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (৭ আগস্ট) এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে সড়ক পরিবহন আইনের অধীনে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের ফান্ড গঠনে কী অগ্রগতি হয়েছে, তা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

গত ১৫ এপ্রিল ঢাকার রূপনগরের সবজি বিক্রেতা আয়নাল হোসেন তার স্ত্রী ফিরোজা বেগমের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্স করে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন। বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ঘোগা সেতুর পাশে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে ঘটনাস্থলে আয়নাল হোসেনের মৃত্যু হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সের চালকেরও মৃত্যু হয়। নিহত অ্যাম্বুলেন্স চালকের নাম দ্বীন ইসলাম (৪৫)। তার বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী থানায়। এ ঘটনায় আহত হন আয়নাল হোসেনের তিন ছেলে ফরিদ হোসেন (২০), ফরহাদ হোসেন (১৮) ও ফিরোজ হোসেন (২৯)।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ঘটনাস্থলে আয়নাল হোসেনের মৃত্যু হয়। পর অ্যাম্বুলেন্সের চালকেরও মৃত্যু হয়। আর আহত হন আয়নাল হোসেনের তিন সন্তানসহ বেশ কয়েকজন।

এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। শ্যামলী পরিবহনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সাতজন।

আদালত শুনানি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রিটকারী সাতজনকে এক কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

সড়ক ও পরিবহন সচিব, আইন সচিব, বিআরটিএর চেয়ারম্যান ও শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য ডলি পারভীনকে ৭০ লাখ ৫০ হাজার, রোজিনা খাতুনকে ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নিহত আয়নালের তিন ছেলে যথা ক্রমে ফরহাদ হোসেনকে ৮ লাখ টাকা, ফিরোজ হোসেনকে ৫ লাখ টাকা, ফরিদ হোসেনকে ৫ লাখ টাকা, আহত দুলফিজুর রহমান রতনকে ৯ লাখ টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্থ অ্যাম্বুলেন্স বাবদ পিপল রিনেমেট অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট কাউন্সিলের পরিচালক আব্দুল আলী বাশারের ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রিট দায়ের করা হয়।