ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান এই আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন।
নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, ইলিশ মাছ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। কিন্তু বর্তমানে ইলিশ মাছের অত্যাধিক দামের কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই ইলিশ মাছ কিনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। অন্যদিকে দেশের মধ্যবিত্ত জনগণও এই ইলিশ মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের দাম গড়ে ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা কেজি। এছাড়া ইলিশ মাছের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু ইলিশ হলো পদ্মা নদীর ইলিশ। বাজারে পদ্মার ইলিশের দাম গড়ে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি। কিন্তু পদ্মা নদী থেকে সীমিত পরিমান ইলিশ মাছ পাওয়া যায় এবং বাজারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায় না ববং যেসব ইলিশ পাওয়া সেগুলো মূলত অন্যান্য নদীর ও সামুদ্রিক ইলিশ মাছ।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির ফলে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশের দাম আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আরো দুঃখজনক বিষয় এই যে, বাংলাদেশের বাজারদরের চেয়ে কম মূল্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে।
নোটিশে আরো বলা হয়েছে যে, ভারতে যে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে সেগুলো মূলত পদ্মার ইলিশ। এমনিতেই পদ্মা নদী থেকে সীমিত পরিমান ইলিশ পাওয়া যায় । তাই এই পদ্মার ইলিশগুলো ভারতে রপ্তানির ফলে বাংলাদেশের বাজারগুলোতে পদ্মার ইলিশ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানি যোগ্য পণ্য নয় । বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ অনায্যভাবে, জণগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার যদি বিদেশীদের ইলিশের স্বাদ উপভোগ করাতে চায়, সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন “ইলিশ উৎসব” আয়োজন করতে পারে। যেখানে বিদেশীদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বাংলাদেশে ভ্রমণ করে ইলিশের স্বাদ উপভোগ করার। এমনকি আসন্ন দূর্গা পূজায় ভারতীয়দের আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে বাংলাদেশে ভ্রমণ করে ইলিশের স্বাদ উপভোগ করার ।
এখানে উল্লেখ্য যে, পর্যটন কর্পোরেশন আইন (বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন অর্ডার) এর ধারা ৫ অনুযায়ী অনুযায়ী, পর্যটনের উন্নয়ন, বিকাশ, বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সহ পর্যটনের সকল প্রকার উৎকর্ষ সাধনের দায়িত্ব পর্যটন কর্পোরেশনের।