মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : চাঞ্চল্যকর রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়েছে। মামলাটির ২৯ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) মামলাটির চার্জ গঠন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনাকারী এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ লইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম-কে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পিপি ফরিদুল আলম ফরিদ জানান, মামলাটির ২৯ জন আসামীর মধ্যে চার্জ গঠনের সময় আদালতে ১৪ জন উপস্থিত ছিলেন। ১ জন আসামী চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অবশিষ্ট ১৪ জন আসামী পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের ডি ব্লকের “Arakan Rohingya Society for Peace and Human Rights” (ARSPH) এর চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ (৫০) কে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে।
মুহিব উল্লাহ হত্যার পরদিন তার ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ (৪৩) বাদী হয়ে উখিয়া থানায় ফৌজদারি দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় অজ্ঞাত আসামী উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার উখিয়া থানা মামলা নম্বর : ১২৬/২০২১ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৮০৯/২০২১ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৫১৮/২০২২ ইংরেজি। নিহত মুহিব উল্লাহ রোহিঙ্গা মৃত ফজল আহম্মেদ ও উম্মে ফজলের পুত্র।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও), উখিয়া থানার এসআই কাজী সালাহ উদ্দিন চলতি বছরের ৯ জুন ফৌজদারি দন্ডবিধির ৩০২/১০৯/১১৪/৩৪ ধারায় ২৯ জন আসামীকে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত করে বিচারের প্রার্থনা জানিয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আসামিরা সবাই রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাথে জড়িত বলে জানায় পুলিশ।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলাটি বিচারের জন্য রোববার চার্জ গঠনের পর আগামী ১১ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য্য করা হয়েছে।
চার্জ গঠন বিষয়ে পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ জানান, কক্সবাজার বিচার বিভাগে মামলার প্রচুর চাপ থাকা সত্ত্বেও চাঞ্চল্যকর মামলাগুলো রাষ্ট্রপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা শরনার্থী নেতা চাঞ্চল্যকর মুহিব উল্লাহ হত্যা মামলাটি ঘটনার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ হত্যার পর এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করে জাতিসংঘ উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশন সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন বিবৃতি প্রদান করেন।