ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারকসহ নাজিরের অপসারণের দাবি আদায় না হওয়ায় আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচি আরো ৩ দিন বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার বিকালে প্রথম দফায় ডাকা ৩ দিনের আদালত বর্জন কর্মসূচির শেষ দিনে বিকালে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে সাধারণ সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। নতুন ঘোষিত কর্মসূচির আওতায় চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার কোনো আদালতের এজলাসে যাবেন না আইনজীবীরা। এর আগে সোমবার প্রথম দফায় ডাকা কর্মসূচির শেষ দিনে সকাল থেকেই কোন আদালইে যাননি তারা। আইনজীবী সমিতির কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়ে তারা তাদের কর্মসূচি পালন করে। এতে করে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
উল্লেখ্য, গেল ১ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে নারী ও শিশু-১ আদালাতরে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুসারে বিচারক মামলাটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। এছাড়াও তারা জাল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জাড়িত আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণে জেলা জজের কাছে দাবি জানান।
আইনজীবীদের অভিযোগ, জেলা জজ ওই নাজিরকে রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন এবং জেলা জজের ইন্ধনেই বিচার বিভাগীয় কর্মচারি অ্যাসোসিয়েশন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। সেজন্য তারা জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবি জানিয়ে বৃহস্পতি, রবি ও সোমবার পর্যন্ত ৩ দিনের জন্য সকল কোর্ট বর্জন কর্মসূচি পালন করে জেলা আইনজীবী সমিতি।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকসহ তিন আইনজীবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদালত অবমাননার রুলসহ এ আদেশ দেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।