বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

চাকরিচ্যুত ৮৫ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুনর্বহালের আদেশ বাতিল

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির সইয়ের পর আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার নিয়োগ পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দেন আপিল বিভাগ। প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী। অন্যদিকে চাকরিচ্যুত নির্বাচন কর্মকর্তাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, প্রবীর নিয়োগী, সালাহ উদ্দিন দোলন ও কামরুল হক সিদ্দিকী।

২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে অনুত্তীর্ণ ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়।

এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। পরে এর বিরুদ্ধে আপিল করেন তারা। এই আপিল মঞ্জুর করে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তীতে রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে পৃথক আপিল করে সরকারপক্ষ। সেই আপিল মঞ্জুর করে উপরোক্ত রায় দিলেন আপিল বিভাগ।