পৃথক প্রবেশন বিভাগ প্রতিষ্ঠার আদেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে প্রবেশন আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী উপযুক্ত মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে প্রবেশন দিতে অধস্তন আদালতকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ সঙ্ক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন এবং তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মাদ মিসবাহ উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট মো. আশরাফুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষ ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
এর আগে উপযুক্ত আসামিদের প্রবেশন দিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন ১১ আইনজীবী। রিট দায়েরকারী আইনজীবীরা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, আল রেজা মো. আমির, মো. রেজাউল ইসলাম, কে এম মামুনুর রশিদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান, আলাউদ্দিন, রেজাউল করিম এবং মোহাম্মদ হারুন।
আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, প্রবেশন আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী পুরুষ আসামির ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট কয়েকটি ধারায় অপরাধের দণ্ড ছাড়া যেকোনো দণ্ডের ক্ষেত্রে প্রবেশন পেতে পারে। নারী আসামির ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড ছাড়া যেকোনো দণ্ডের ক্ষেত্রে প্রবেশন পেতে পারে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, অত্যন্ত স্বল্প দণ্ডের মামলাও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে দায়রা আদালত, হাইকোর্ট বিভাগ ঘুরে আপিল বিভাগ পর্যন্ত চলে আসছে। অথচ এমন অসংখ্য মামলা আছে যেগুলোতে প্রবেশন আদেশ হলে প্রথম কোর্টেই শেষ হয়ে যেতে পারত। এমনিভাবে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় যায়। মামলা জট তৈরি হয় বলে উল্লেখ করেন রিটকারী আইনজীবী।
তিনি বলেন, সারাদেশে ৬৮টি কারাগারে অনুমোদিত বন্দি সংখ্যা ৪২ হাজার ৬২৬ জন। কিন্তু ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কারা অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী কারাগারে মোট বন্দি সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৪৯৮ জন। এতে কারা ব্যবস্থাপনা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। বন্দিদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা, সংশোধনের পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে।
এ প্রেক্ষিতে রিট দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে আদেশের বিষয়ে আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, হাইকোর্ট প্রবেশন আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে প্রবেশন দিতে অধস্তন আদালতকে নির্দেশনা এবং পৃথক প্রবেশন বিভাগ প্রতিষ্ঠার আদেশ কেন দেওয়া হবে না মর্মে ৪ সপ্তাহের রুল জারি করেছেন।