এক বিচারককের ওএসডির দিনে অন্য বিচারকের আবেগঘন স্ট্যাটাস
বিচারক (প্রতীকী ছবি)

এক বিচারকের ওএসডির দিনে অন্য বিচারকের আবেগঘন স্ট্যাটাস

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর পরামর্শে গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রুবাইয়া ইয়াসমিনকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করেছে সরকার।

যেদিন আমার চৌদ্দ বছরের ছেলেটা মাদ্রাসায় মাটি টেনে নতুন পাঞ্জাবি ময়লা করে বাসায় ফিরেছিল, সেদিন খুশিতে আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়েছিল। আর আমি মনে মনে তার শিক্ষক হাফেজ সাহেবকে ধন্যবাদ দিয়েছিলাম- সে জজের ছেলে বলে আমার ছেলেকে মাটি টানতে বারণ করেনি। আলহামদুলিল্লাহ্ আমার বড় ছেলে এখন কোরআনে হাফেজ।

জানা গেছে, বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী, সব শিক্ষার্থীর পালাক্রমে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা থাকলেও বিচারকের মেয়ে কখনোই ঝাড়ু দেয় না। বিষয়টি নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার।

সোমবার রাতে স্কুলের একটি ফেসবুক গ্রুপে সহপাঠীদের কটাক্ষ করে একটি পোস্ট লেখে বিচারকের মেয়ে। এতে কয়েকজন সহপাঠী প্রতিবাদ জানায়।

পরদিন সকালে স্কুলের অভিভাবক সমাবেশে এসে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন ৩ শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবককে শিক্ষকের মাধ্যমে ডেকে আনেন। ফেসবুকে তাকে ও তার মেয়েকে নিয়ে ‘অপমানজনক কথা’ বলা হয়েছে এমন দাবি করে সাইবার অপরাধের অভিযোগে মামলা করার হুমকি দেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা জানান, অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে মামলার হুমকি দেওয়ার এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন ওই বিচারক। সেসময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোছা. রাবেয়া খাতুন সেই বিচারকের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের শাসান।

এদিকে এই বিচারকের ওএসডির দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নিজের আবেগঘন স্ট্যাটাস, দিয়েছেন নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার।

তিনি তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, যেদিন আমার চৌদ্দ বছরের ছেলেটা মাদ্রাসায় মাটি টেনে নতুন পাঞ্জাবি ময়লা করে বাসায় ফিরেছিল, সেদিন খুশিতে আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়েছিল। আর আমি মনে মনে তার শিক্ষক হাফেজ সাহেবকে ধন্যবাদ দিয়েছিলাম- সে জজের ছেলে বলে আমার ছেলেকে মাটি টানতে বারণ করেনি। আলহামদুলিল্লাহ্ আমার বড় ছেলে এখন কোরআনে হাফেজ।

বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদারের দেওয়া স্ট্যাটাস ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাঁর এমন ব্যক্তিত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রশংসায় ভাসিয়ে নেটিজেনদের কেউ কেউ তাঁকে তুলনা করেছেন বাদশাহ্ আলমগীরের সাথেও!