খাস কামরায় নয়, বিচারিক আদালতের আদেশ-রায় দিতে হবে প্রকাশ্য আদালতে
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা কেড়ে নিলেন হাইকোর্ট

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ সংক্রান্ত আইনের বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ের পর উপজেলা প্রশাসন পরিচালনায় ইউএনও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না।

উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার (২৯ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

উপজেলা পরিষদ আইনের এ ধারাটি বাতিল করার ফলে উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বায়িত্ব পালন করতে পারবেন না ইউএনওরা। অর্থাৎ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই উপজেলা পরিষদ পরিচালিত হবে। এছাড়া উপজেলা পরিষদের কোনো কার্যক্রমও উপজেলা প্রশাসনের ব্যানারে হবে না বলে জানান আইনজীবীরা।

২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮-এর ধারা ১৩ (ক) ১৩ (খ) ও ১৩ (গ) কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত। পাশাপাশি, উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ সংক্রান্ত উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা কেন বাতিল করা হবে না, এ মর্মে আরও একটি রুল জারি করা হয়।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এবং বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথক রুল জারি করেন।

আইনের ৩৩ (১) ধারায় বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। (২) পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃংখলা প্রতিপালন এবং বিধি মাধ্যমে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৫ জুন উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা খর্ব করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ক্ষমতা দেওয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজসহ তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান এ রিট দায়ের করেন।