১১ বছরে বিনা খরচে আইনি সেবা পেয়েছেন লক্ষাধিক কারাবন্দি
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা

১১ বছরে বিনা খরচে আইনি সেবা পেয়েছেন লক্ষাধিক কারাবন্দি

গত ১১ বছরে (২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’র আওতায় বিনামূল্যে এক লাখ পাঁচ হাজার ৬৫০ জন কারাবন্দি আইনি সহায়তা পেয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সংস্থাটির পক্ষে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রমে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৭৭ জন। ৬৪ জেলার লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ছয় লাখ ৭২ হাজার ৮০১ জন।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৭৩৮ জন এবং টোল ফ্রি হেল্পলাইনের মাধ্যমে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা এক লাখ ৫৩ হাজার ৪১৩ জন।

এছাড়া ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত এক লাখ ৫ হাজার ৬৫০ জন কারাবন্দি আইনি সহায়তা পেয়েছেন।

সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা

দরিদ্র ও অসহায় বিচারপ্রার্থীদের সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করে।

এ আইনের আওতায় সরকার ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করে এবং দরিদ্র অসহায় মানুষের আইনের আশ্রয় ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশে এ সংস্থার অধীনে প্রত্যেক জেলায় জেলা ও দায়রা জজকে চেয়ারম্যান করে একটি করে জেলা কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা লিগ্যাল এইড কমিটি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টেও একটি কমিটি রয়েছে। যার চেয়ারম্যান হচ্ছেন হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি।

সরকারি আইনি সেবাপ্রাপ্তির যোগ্যতা

অসচ্ছল বা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তি যার বার্ষিক গড় আয় সুপ্রিম কোর্টে আইনগত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে দেড় লাখ এবং অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে এক লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে দেড় লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয় এবং যে কোনো শ্রমিক যার বার্ষিক গড় আয় এক লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়। যে কোনো শিশু; মানবপাচারের শিকার যে কোনো ব্যক্তি; শারীরিক-মানসিক নির্যাতন এবং যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু; নিরাশ্রয় ব্যক্তি বা ভবঘুরে এবং যে কোনো উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোক।

পারিবারিক সহিংসতার শিকার অথবা সহিংসতার ঝুঁকিতে আছেন এরূপ যে কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি; বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন ব্যক্তি; ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ মা এবং দুর্বৃত্ত দ্বারা অ্যাসিড দগ্ধ নারী বা শিশু।

আদর্শগ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি; অসচ্ছল বিধবা স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুস্থ নারী; যে কোনো প্রতিবন্ধী; বিনা বিচারে আটক অসচ্ছল ব্যক্তি; আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে বিবেচিত ব্যক্তি; জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিবেচিত বা সুপারিশকৃত অসহায় বা অসচ্ছল ব্যক্তি এবং এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণে সংস্থা কর্তৃক চিহ্নিত ব্যক্তি সেবাপ্রাপ্তির যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন।