৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য প্রচলিত পেপার পেন্সিল পরীক্ষার পরিবর্তে শুধুমাত্র এসাইনমেন্ট, প্রকল্পভিত্তিক কাজ, অনুসন্ধানমূলক কাজ এর মাধ্যমে মূল্যায়নের বিষয়ে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লিখিত নির্দেশনা জারির জন্য সাত (০৭) দিনের সময় দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ সোমবার (৫ জুন) রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবএবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই নোটিশ দিয়েছেন অ্যাডভোকেট হাসান এন্ড এসোসিয়েটস এর স্বত্ত্বাধিকারী বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।
নোটিশে ভবিষ্যতে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা ফি গ্রহণ করে সিটি বা ক্লাস পরীক্ষা, অর্ধ বার্ষিক প্রস্তুতিমূলক মূল্যায়ন পরীক্ষা, অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা, বার্ষিক প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা এবং বার্ষিক পরীক্ষা নামে প্রচলিত পেপার পেন্সিল পরীক্ষা আয়োজন করলে, কোন স্কুলের শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্য করলে, সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত বইয়ের বাইরে কোন প্রকার বই, গাইড বই কিনতে বাধ্য করলে এবং সেই বইয়ের আলোকে কোন প্রকার পরীক্ষা গ্রহণ করলে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষায় বড় পরিবর্তনের সূচনা করা হয়। এরই আলোকে ৪ জানুয়ারি ২০২৩ ইং থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত করা হয়। ২০২৪ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। ২০২৫ সালে চালু হবে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে। উচ্চমাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৭ সালে চালুর মধ্য দিয়ে পুরোপুরিভাবে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথাগত পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন (শিখনকালীন) বেশি হবে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথাগত কোন পরীক্ষাই হবে না। সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান) কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন, বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে। অবশিষ্ট পাঁচটি বিষয়ের পুরোটাই মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন।
তবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে গিয়ে সামষ্টিক মূল্যায়ন বেশি হবে (৭০ শতাংশ সামষ্টিক ও ৩০ শতাংশ শিখনকালীন)। সামষ্টিক মূল্যায়নও এখনকার মতো শুধু কাগজ-কলমনির্ভর পরীক্ষা হবে না। অ্যাসাইনমেন্ট, উপস্থাপন, যোগাযোগ, হাতে-কলমের কাজ ইত্যাদি বহুমুখী পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এখনকার মতো জিপিএভিত্তিক ফলাফলও প্রকাশ করা হবে না। তিনটি ধাপে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এর মধ্যে প্রথম স্তরটিকে বলা হবে পারদর্শিতার প্রারম্ভিক স্তর। দ্বিতীয় স্তরটি বলা হবে অন্তর্বর্তী বা মাধ্যমিক স্তর। আর সর্বশেষ, অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো স্তরটিকে বলা হবে পারদর্শী স্তর।