প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বারের নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ: আইনজীবীদের নতুন ভবন নির্মাণে আশ্বাস
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বারের নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বারের নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ: আইনজীবীদের নতুন ভবন নির্মাণে আশ্বাস

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের সদস্যদের কিউবিক্যাল সমস্যা নিরসনে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আজ সোমবার (৫ জুন) গণভবনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আশ্বাস দেন বলে জানিয়েছেন বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, জুডিসিয়ারি ও বারের উন্নয়নের প্রধানমন্ত্রী সবসময় পাশে থাকবেন এবং আইনজীবীদের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, তিনি এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। এক বিরল মানবিক সত্ত্বা। প্রায় ৩০ মিনিট তিনি প্রাণখুলে কথা বলেন আমাদের সাথে। সব কিছু জেনে নেন। অনেক সুখবর অপেক্ষা করছে।

সাক্ষাতে সমিতির নির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল, সহ সভাপতি মো. আলী আজম ও জেসমিন সুলতানা, সহসম্পাদক এ বি এম নূর-এ-আলম ও মোহাম্মদ হারুন-উর রশিদ, কোষাধ্যক্ষ এম. মাসুদ আলম চৌধুরী এবং নির্বাচিত সাত সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ (রুদ্র), মনিরুজ্জামান রানা, শফিক রায়হান শাওন, মো. সাফায়েত হোসেন (সজীব), মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. নাজমুল হুদা ও সুভাষ চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যদের কিউবিক্যাল সমস্যা নিরসনে গত বছর নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ২০তলা ভবন নির্মাণ করা হবে।

এ লক্ষ্যে প্রথমে জায়গার ব্যবস্থা করতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সাথে মতবিনিময় করে সমিতির নেতৃবৃন্দ। জায়গার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সবুজ সংকেত পাওয়ার পর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠে নামে সংশ্লিষ্টরা।

তবে অত্যাধুনিক এ ভবন নির্মাণে যে ব্যয়, তা যোগান দেওয়া সমিতির পক্ষে সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সরকারি অনুদানের জন্য সমিতির পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখন আইনমন্ত্রী বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবেন বলে জানান।

প্রস্তাবিত ২০ তলা ভবনের চাহিদাপত্রে যা যা আছে

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের জন্য বহুতল নতুন ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে গণপূর্ত বিভাগে চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল স্বাক্ষরিত চাহিদাপত্রটি গত বছরের ২১ জুন গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর প্রেরণ করা হয়।

সমিতির এনেক্স এবং এনেক্স এক্সটেনশন ভবন ভেঙ্গে ওই জায়গাসহ পিছনের খালি জায়গায় নির্মিতব্য প্রস্তাবিত বহুতল ভবনের চাহিদাপত্র অনুযায়ী সমিতি (১৬ তলা + ৪ তলা বেইজমেন্টসহ) ২০ তলা ভবন নির্মাণে আগ্রহী।

এরমধ্যে বেইজমেন্ট-২, ৩, ৪ শুধমাত্র পার্কিং এর জন্য ব্যবহার করা হবে। আর বেইজমেন্ট-১ এ পার্কিংয়ের সাথে থাকবে দোকান, কম্পিউটার জোন, সেলুন ও জেনারেটর।

গ্রাউন্ডফ্লোরে থাকবে মসজিদ, ৩টি ক্যান্টিন, কনভেনশন সেন্টার, ডে-কেয়ার, ব্রেস্ট ফিডিং রুম, ক্লিনিক, রিসিপশন, ক্লায়েন্ট শেড ও ব্যাংক।

দ্বিতীয় তলায় থাকবে কনভেনশন সেন্টার, লাইব্রেরী, আরবিট্রেশন সেন্টার, কনফারেন্স রুম, হল রুম ও ব্যাংক।

তৃতীয় তলায় হল রুম, নারীদের জন্য কমন রুম ও নামাজের ঘর এবং মাইনরিটি কনফারেন্স রুম।

চতুর্থ তলায় হল রুম, নারীদের জন্য কমন রুম, অফিস রুম।

পঞ্চম তলা থেকে ১৬ তলা পর্যন্ত আইনজীবীদের বসার স্থান বা কিউবিক্যালস।

আর টপ ফ্লোরে ২টি সুইমিংপুল, ২টি জাকুজি, ফুড কোর্ট, ল’ইয়ার্স ফিটনেস ক্লাব (পুরুষ ও নারী), খেলার রুম (নারী ও পুরুষ) আর বার-বি-কিউ রেস্টুরেন্ট।

এসব চাহিদার বাহিরেও একটি যুগোপযোগী ও অত্যাধুনিক ভবনের জন্য যেসকল সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন যেমন ৫ হাজার কেভিএ সম্পন্ন বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, প্রশস্ত সিঁড়ি, পর্যাপ্ত কার্গো লিফট, ফায়ার এক্সিট, সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেম, আলো-বাতাস নির্গমনের জন্য পর্যাপ্ত ভয়েড, পর্যাপ্ত ও অত্যাধুনিক টয়লেট (নারী ও পুরুষ আইনজীবী এবং পাবলিক), উন্নত বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা, গ্যাংওয়ে, পর্যাপ্ত উচ্চতা, ফায়ার এলার্ম সিস্টেম, ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড, স্টোর রুম, ক্লিনিং মেটেরিয়ালস রুম, পর্যাপ্ত স্পেস সম্বলিত করিডোর, CCTV ক্যামেরা সেটআপ, WiFi Zone নেটওয়ার্কিং ইত্যাদিসহ অন্যান্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রস্তাবিত নতুন ভবনে রাখা প্রয়োজন বলে চাহিদাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।