আজ পহেলা ফাল্গুন, বসন্ত বরণ, অন্যদিকে ভালোবাসা দিবস, হাতে হ্যান্ডকাফ, সঙ্গে আছে পুলিশ। আদালতের গারদখানা থেকে বের হচ্ছেন বর।আদালতের বারান্দায় অপেক্ষায় আছেন কনে ও উভয় পরিবারের সদস্যরা।
অবশেষে আদালতের ক্যান্টিনে বসে আইনজীবী, পুলিশ ও আদালতের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহে।
বিয়ে হয়ে গেলে মিষ্টিও বিতরণ করা হয় উপস্থিতিদের মধ্যে। ভালোবাসা দিবসে ব্যতিক্রম এমন বিয়ে হলো ঝিনাইদহ আদালত চত্বরে। স্কুলছাত্রীকে অপহরণের মামলায় জামিন পেতে এমন বিয়ে হয়েছে আদালতে। তবে বিয়েতে অনেক খুশি বর-কনেসহ দুই পরিবারের সদস্যরা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মহেশপুর উপজেলার জুকা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসা-যাওয়ার সূত্র ধরে ওই গ্রামের স্কুলছাত্রী জেসমিন খাতুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পাশের গোপালপুর গ্রামের জুবায়ের হোসেনের।
কয়েক মাস তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতো। জানাজানি হওয়ার পর পরিবার থেকে মেনে না নেওয়ায় গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জেসমিনকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন জুবায়ের।
এ ঘটনায় ২৪ ডিসেম্বর জেসমিনের বাবা বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় জুবায়েরসহ চারজনের নামে অপহরণ মামলা করেন। এ মামলায় ওইদিনই জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই থেকে কারাগারে জুবায়ের।
বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবার মীমাংসা করে আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আদালতে জামিন আবেদন করেন। ঝিনাইদহের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নাজিমুদৌলা পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করলে জামিন দেওয়া হবে বলে শর্ত দেন।
সেই শর্তে রাজি হয়ে আদালতেই বিয়ে হয় জুবায়ের ও জেসমিনের। বিয়েতে খুশি বর ও কনের পরিবার।
বর জুবায়ের হোসেন জানান, ভালোবাসা দিবসে জামিন পেয়ে আমার প্রিয় মানুষটাকে পেয়েছি। এতে আমি খুব খুশি। দুই মাস জেল খাটার পর তাকে পেলাম। আপনারা আমাদের দুজনের জন্য দোয়া করবেন।
জুবায়ের হোসেনের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আদালতে ছেলের বিয়ে হলো। তাতে আমরা খুশি। এখন ওদের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারব। দোয়া করি ওরা যেন সুখি হয়।
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশারত হোসেন খোকন বলেন, আদালতের নির্দেশে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়েছে। এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। আদালতের এমন সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।