কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসা দিয়ে অপারেশন থিয়েটারে রোগী রেখে ডাক্তারের পলায়ন, আদালতে মামলা
আদালত (প্রতীকী ছবি)

ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্য ও দালালচক্র: দুদককে তদন্তের নির্দেশ

ঢাকার আশুলিয়া ও সাভার এলাকার ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্য ও দালালচক্রের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১)(গ) ধারা অনুযায়ী মামলা রুজু করেছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জুনাইদ। একই সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

“উমেদাররাই চক্র টিকিয়ে রাখেন”

গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত “উমেদাররাই চক্র টিকিয়ে রাখেন” শিরোনামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এলে, বিচারক তাৎক্ষণিকভাবে এই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এতে উঠে আসে, ভূমি অফিসে সাধারণ সেবা পেতে হলে ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা।

ঘুষ না দিলে হয়রানি, বাতিল হচ্ছে আবেদন

আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়, আশুলিয়া ও সাভার ভূমি অফিসে পেশকার, নায়েব, উমেদারসহ একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় দালালচক্র যৌথভাবে ঘুষ আদায়ে জড়িত। আবেদনকারী সরাসরি সেবা চাইলে নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। এমনকি ঘুষ না দিলে অনেক ক্ষেত্রে খারিজ বা নামজারি আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়।

দুর্নীতির ধারায় অপরাধ সংঘটিত: আদালতের পর্যবেক্ষণ

বিচারকের মতে, এই ঘটনায় দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬২, ৪০৯, ৪২০ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ২০০৪-এর একাধিক ধারা অনুযায়ী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এ কারণে বিষয়টি দুদক বিধিমালা, ২০০৭-এর ৪ বিধি অনুযায়ী তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলায় যাদের নাম উল্লেখ

আদালতের আদেশে উল্লেখ করা নামগুলো হলো:

  • সাহাব উদ্দিন শিহাব (পেশকার)

  • নাজির সোহান

  • নায়েব এবায়েদুর রহমান

  • উমেদার গাজী আল-ইমরান

  • নাইটগার্ড মানিক (নিজেকে অফিস সহকারী পরিচয় দেন)

  • অন্যান্য দালাল: কাওসার, আশিক, শাজাহান, শাকিল, মান্নান, জনি, ইমরান প্রমুখ।

থানাকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশটি সাধারণ ডায়েরিতে অন্তর্ভুক্ত করে দুই কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ দুদকের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ পাঠানোর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া: “বিচারিক সক্রিয়তার অনন্য দৃষ্টান্ত”

আইনজীবীদের মতে, এই মামলার প্রেক্ষিতে ভূমি অফিসে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিচার বিভাগের সক্রিয়তা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বাড়বে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।