জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আজ সোমবার (১২ মে) দুপুরে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।
তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনাকে ‘জুলাই গণহত্যার মূল নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম দুপুর ১টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে তাজুল ইসলাম জানান, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার দাখিল করবে আশা করছি। রিপোর্ট জমা পড়ার পর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (Formal Charge) দাখিলের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে চানখারপুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এ সপ্তাহেই তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে বিচার কার্যক্রম শুরু করা হবে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলার তদন্ত শেষ করতে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই নির্দেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশজুড়ে দমনপীড়ন চালায়। নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও হত্যা চালানো হয়। এতে প্রাণ হারায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ। ৫ আগস্ট, এই দমনমূলক ঘটনার মধ্য দিয়েই শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটে। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু করে।