জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এভিডেন্স (প্রমাণ) হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জ্ঞান আহরণ বা গবেষণার উদ্দেশ্যে প্রতিবেদনটি কেন সংরক্ষণ করা হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার (১৪ মে) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।
আইনজীবী তানভীর আহমেদ জানান, ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট তিনি হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন, যাতে গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসকদের রক্ষায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই রিটের শুনানিতে আদালত কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষের হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচারের বিষয়ে রুল জারি করেছিলেন।
পরবর্তীকালে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সেটি যুক্ত করে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
তিনি বলেন, “জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে ১,৪০০ মানুষের হত্যার তথ্য, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, সহিংসতার ধরন এবং বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা তুলে ধরা হয়েছে। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক রিপোর্ট।”
তানভীর আহমেদ আরও বলেন, “আমরা মনে করি, এই রিপোর্ট সংরক্ষণের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে—প্রথমত, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জানার অধিকার; দ্বিতীয়ত, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এভিডেন্স হিসেবে সংরক্ষণ; এবং তৃতীয়ত, ভবিষ্যতে গবেষণা ও আন্তর্জাতিক প্রচারে কাজে লাগার উপযোগিতা।”
তিনি আরও জানান, “এই রিপোর্ট ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করেছে বলে জেনেছি। এরপরও আমরা এটি কোর্ট অব রেকর্ড হিসেবে হাইকোর্টে দাখিল করেছি এবং আদালত সেই আবেদনে রুল জারি করেছেন।”
আদালত সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন, কেন জাতিসংঘের এ ঐতিহাসিক দলিলটি রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ, দলিল হিসেবে গ্রহণ এবং ভবিষ্যৎ গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।