“দুর্নীতি যত কমবে, সমাজে বৈষম্য তত কমবে”—এমন মন্তব্য করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনের আহ্বান জানালেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
“আসুন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হই” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে দুদকের ১৭৫তম গণশুনানি। জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় আয়োজিত এই দিনব্যাপী গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্যে বলেন,
“সারাদেশে দুদকের অফিস বাড়ানো বা জনবল বাড়ানোর কথা বলা হয়। আমি বলি, সমাজে যত দুর্নীতি কমবে, দুদকের প্রয়োজনও তত কমবে। দুর্নীতি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি করে না, এটি সমাজে বৈষম্য তৈরি করে। বৈধ সেবা পেতে আমরা নিজেরাই অনেক সময় ঘুষ দেই—এটি বন্ধ করতে হবে। মৌলভীবাজারকে দুর্নীতিমুক্ত জেলা হিসেবে গড়তে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ বলেন,
“দুদক দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তবে এই যুদ্ধ জয় করা শুধুমাত্র দুদকের একার পক্ষে সম্ভব নয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ঘুষের বিরুদ্ধে নিজে প্রতিবাদ করুন, চিৎকার করুন, ভিডিও করুন—দেখবেন প্রতিষ্ঠানিক দুর্নীতি কমে যাবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আকতার হোসেন, পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, এবং দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় হবিগঞ্জ-এর উপপরিচালক মো. এরশাদ মিয়াঁ।
গণশুনানিতে জেলার ১৮টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত ৫৮টি অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি অনুসন্ধানে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ১১টি অভিযোগের তাৎক্ষণিক সমাধান প্রদান করা হয় এবং বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে এই ধরনের গণশুনানির আয়োজন করে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ ও অভিযোগ শোনার মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে কমিশন।