শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা : মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ জনসহ সব আসামি খালাস

বাতিল হওয়া দুর্নীতির মামলা সচলের উদ্যোগ, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রায় বাতিল চায় দুদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র (বার্জ মাউন্টেড) দুর্নীতির মামলা পুনরায় সচল করতে উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় দেড় দশক আগে হাইকোর্ট যে রায়ের মাধ্যমে মামলাটি বাতিল করেছিলেন, সেটি বাতিল চেয়ে লিভ টু আপিল করেছে দুদক।

আজ রোববার (১৮ মে) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। আগামী ১৫ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মামলাটিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক উপাদান বিদ্যমান এবং তিনি একজন এজাহারনামীয় আসামি। মামলার ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচারকাজ চলাকালীন অবস্থায় এমন মামলা বাতিলের সুযোগ নেই।

দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসিফ হাসান বলেন,

“আমরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছি। সেটির উপর ১৫ জুলাই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।”

মামলার পটভূমি:

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে তিন কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করে বেসরকারি খাতে তিনটি ভাসমান বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। এতে শেখ হাসিনাসহ সাতজনকে আসামি করা হয়।

২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে এবং মামলার বিচার শুরু হয় বিশেষ জজ আদালত-১-এ, যা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত বিশেষ আদালতে পরিচালিত হয়। আদালত তখন ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে।

পরে শেখ হাসিনার আবেদনে হাইকোর্ট মামলার বিচার স্থগিত করে। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে শেখ হাসিনা মামলাটি বাতিলের জন্য রুল শুনানির আবেদন করেন।

২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল বিচারপতি মো. শামসুল হুদা ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে রায় প্রদান করেন।

দেড় দশক পর ফের উদ্যোগ

এই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক এতদিন আপিল করেনি। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। দীর্ঘ ৫ হাজার ৪৫২ দিন পর, অর্থাৎ প্রায় ১৫ বছর পরে হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিভ টু আপিল করে দুদক।

এ বছরের ১৭ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আবেদনটি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আজ (১৮ মে) বিষয়টি কার্যতালিকায় উঠে আসলে আপিল বিভাগ জানায়, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এটি শুনানি হবে।