করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে নিয়মিত আদালত বন্ধ থাকায় ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে জরুরি মামলা শুনানি জন্য আরও দু’টি বেঞ্চ গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রোববার (৫ জুলাই) এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট বিভাগের প্রশাসন শাখা।
এতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে এবং শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া ৬ জুলাই (আজ) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘আদালতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এবং সুপ্রিম কোর্টের জারি করা প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য বেঞ্চগুলো (২) গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি।
নতুন দু’টি বেঞ্চের বিচারপতি হলেন-বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান। এ দু’টি বেঞ্চের একটিকে জামিন আবেদনসহ ফৌজদারি মামলা এবং আরেকটিকে দেওয়ানি মামলা শুনানির এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৫ জুন আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ১৩ টি বেঞ্চ গঠন করার কথা জানানো হয়েছিলো।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে গত ২৬ এপ্রিল ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য সুপ্রিম কোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন এবং ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেদিন প্রথমবারের মতো ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের ৮৮ জন বিচারপতি।
এ অবস্থায় গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ২ দিন পর ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধাদেশে বলা হয়, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।
পরে ১০ মে ভিডিও কনফারেন্সে সব বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠকের পর (ফুলকোর্ট) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি চেম্বার কোর্ট এবং হাইকোর্ট বিভাগে কয়েকটি বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি।
করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি আদেশের সঙ্গে মিল রেখে আদালত অঙ্গনেও সাধারণ ছুটি ছিল। পরে দফায় দফায় সাধারণ ছুটিরও মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে সরকার ৩০ মে’র পর সাধারণ ছুটি আর বাড়ায়নি। কিন্তু পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল আদালত চলবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।